হোম > বিশ্ব > আফ্রিকা

তাপপ্রবাহে বরফের বাজার গরম মালিতে

অনলাইন ডেস্ক

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে এখন রেকর্ডভাঙা তাপপ্রবাহ চলছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিংও। ফলে দেশটিতে বরফের দাম এখন আকাশচুম্বী। রোববার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, মালির বিভিন্ন অঞ্চলে বরফের দাম এখন রুটি এবং দুধের মূল্যকেও ছাড়িয়ে গেছে। 

মালির রাজধানী বামাকোর এক স্থানীয় আড়তদারের কাছে বরফ সংগ্রহের উদ্দেশে গিয়েছিলেন ১৫ বছর বয়সী কিশোরী ফাতুমা ইয়াত্তারা। পরিস্থিতির বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বরফ কিনতে বেরিয়েছি, কারণ এটির চাহিদা এখন তুঙ্গে।’ 

একে তো ৪৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা, তার ওপর দীর্ঘ লোডশেডিং। ফলে বাড়িতে অকেজো হয়ে পড়ে আছে ফ্রিজ। এ অবস্থায় খাদ্যপণ্য সংরক্ষণ এবং কিছুটা শীতল পরশের জন্য বরফের সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন ফাতুমা। কিন্তু সমস্যাটি শুধু তাঁর একার নয়, আরও অসংখ্য মানুষকে তাপপ্রবাহের মধ্যে বাইরে থেকে বরফ কিনতে হচ্ছে। এর ফলে দেখা গেছে, ছোট এক ব্যাগ ভর্তি বরফ কিনতেই বাংলাদেশি মুদ্রার হিসেবে ১০০ টাকারও বেশি খরচ করতে হচ্ছে তাঁদের। দেশটিতে সাধারণ খাবার কিনতেও এত অর্থের প্রয়োজন হয় না। 

আবার কোনাটে ট্রেওরি নামে একজন জানিয়েছেন, আগে মাত্র দু-এক বার রান্না করেই সারা সপ্তাহ চালিয়ে দিতেন তিনি। আর এখন তাঁকে প্রতিদিনই রান্না করতে হয়। কোনাটে বলেন, ‘প্রায় সময়ই এমন হয় যে, সারা দিন বিদ্যুৎ থাকে না। এর ফলে খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় এবং এগুলোকে ফেলে দিতে হয়।’ 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালিতে এ ধরনের সমস্যার সূত্রপাত হয়েছিল অন্তত এক বছর আগে। সে সময়ই দেশটির রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি কোটি কোটি ডলার ঋণগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও চাহিদার অনুপাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হিমশিম খাচ্ছিল। আর জ্বালানির দাম বেশি হওয়ায় বাড়িতে জেনারেটর ব্যবহারেরও সামর্থ্য নেই মালির বেশির ভাগ মানুষের। এর ফলে বিদ্যুৎ না থাকা মানে রাতের বেলায় তাঁদের ফ্যানও না ঘোরা। বাধ্য হয়ে অনেকেই তাই ঘরের বাইরে উন্মুক্ত আকাশের নিচে ঘুমাতে যাচ্ছেন। 

চলমান পরিস্থিতির মধ্যে বামাকোর কাছাকাছি জেলা ইরিম্যাডিওর বাসিন্দা সোমাইলা মেইগা বলেন, ‘আমরা সত্যিই ভোগান্তির মধ্যে আছি। রাতে তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রিও থাকে। এটা সহ্য করার মতো নয়, কারণ আমার মাথা ঝিমঝিম করে। টিকে থাকার জন্য তাই শরীরে পানি ঢালতে হয়।’ 

গত মার্চ মাসেই মালির বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রিতে পৌঁছায়। প্রচণ্ড তাপে দেশটিতে ইতিমধ্যে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মূলত বয়স্ক মানুষ এবং শিশুরাই সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে আছে। বামাকোর একটি বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের অধ্যাপক তলোবা জানিয়েছেন, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫ জন গরমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এসব রোগীর বেশির ভাগের ক্ষেত্রেই পানিশূন্যতা দেখা যাচ্ছে। কারও কারও ক্ষেত্রে কফ এবং বুকের সংক্রমণও রয়েছে। শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা নিয়েও আসছেন অনেকে। 

পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে স্কুলগুলোতে দীর্ঘ ছুটি ঘোষণা ছাড়াও মুসলিম প্রধান এই দেশটিতে সম্প্রতি শেষ হওয়া রমজানে রোজা না রাখারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। 

অধ্যাপক তলোবা বলেন, ‘এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য আমাদের আরও পরিকল্পনার প্রয়োজন। সম্ভবত ভবিষ্যতে এটি আবারও ফিরে আসবে।’ 

শুধু মালি নয়—দেশটির প্রতিবেশী সেনেগাল, গিনি, বুরকিনা ফাসো, নাইজেরিয়া, নাইজার এবং চাদেও মারাত্মক তাপপ্রবাহ চলছে। ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের (ডব্লিডব্লিউএ) বিজ্ঞানীরা এমন চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার জন্য মানবসৃষ্ট কারণগুলোকেই দায়ী করছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার সোনার খনিতে আর কোনো শ্রমিক আটকা নেই বলে ধারণা

সোনার খনিতে শতাধিক শ্রমিকের মৃত্যু, আটকা আরও ৫০০

সেনাবাহিনীর ভুলে নাইজেরিয়ায় ১৬ জন সাধারণ মানুষ নিহত

আত্মহত্যার চেষ্টাকে ‘অপরাধ’ গণ্য করা অসাংবিধানিক: কেনিয়ার হাইকোর্ট

শীতকালীন পার্টিতে সবাই কেন নাইজেরিয়ায় ছুটছে

চাদের প্রেসিডেন্টের বাসভবনে হামলা, নিহত ১৯

কেনিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নির্বিচার গুম-খুন, যেভাবে ধামাচাপা দিয়েছে পুলিশ

জিম্বাবুয়েতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল

সিংহ ভরা জঙ্গলে পাঁচ দিন, বেঁচে ফিরে অনন্য নজির ৮ বছরের বালকের

যাত্রী নিয়ে ট্রাক উল্টে পড়ল নদীর খাদে, নিহত ৭১

সেকশন