আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ায় ভারী বর্ষণের কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে অন্তত ২২৯ জন নিহত হয়েছে। হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চলে এ ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে প্রাণহানিতে রেকর্ড গড়েছে এই সংখ্যা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ইথিওপিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কেঁচো সাচা গজদি জেলায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার জেলার কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছিলেন—প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিশেষ করে, ভূমিধসে চাপা পড়াদের উদ্ধারে তেমন কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এই প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন তাঁরা।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের বড় একটি অংশই উদ্ধারকর্মী। তাঁরা সোমবার সকালে খাঁড়া একটি ঢালে চাপা পড়াদের উদ্ধারে কাজ করছিলেন। গত রোববার এই ঢালে আরেক ভূমি ধসে চাপা পড়েছিলেন স্থানীয়রা। আকস্মিক এক ভূমিধসে তাঁরা সবাই চাপা পড়েন।
তবে নিহতের সংখ্যা এখানেই শেষ নয়, আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন—জেলার দুর্যোগ সাড়াদান বিভাগের পরিচালক মার্কোস মেলেসি। তিনি বলেছেন, ‘এখনো নিহতদের অনেকেই আমাদের গণনার বাইরে রয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘অনেক শিশুই তাদের স্বজনদের মরদেহ আঁকড়ে আছে। অনেকেই মা-বাবা, ভাই-বোনসহ পুরো পরিবার হারিয়েছে।’
ইথিওপিয়ার এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে সহমর্মিতা ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে আফ্রিকান ইউনিয়ন। আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের চেয়ারপারসন ফাকি মেহমাত বলেছেন, ‘হতাহতদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইথিওপিয়ার জনগণ ও সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করছি।’
পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে ইথিওপিয়া নিকট অতীতে প্রায় নিয়মিতভাবেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে, জলবায়ু পরিবর্তনগত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্ঘটনা প্রায়শই আঘাত হানছে দেশটিতে। সর্বশেষ গত বছরের নভেম্বরেও শীত মৌসুমে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসে দক্ষিণ ও পূর্ব ইথিওপিয়ায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয় এবং বাস্তুচ্যুত হয় কয়েক হাজার মানুষ।