জিম্বাবুয়ের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত একটি বিপজ্জনক বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য থেকে পাঁচ দিন পর আট বছর বয়সী টিনোটেন্ডা পুডুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিবিসি জানিয়েছে, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে মাতুসাদোনা গেম পার্কে। এখানে সিংহ ও হাতির মতো ভয়ংকর প্রাণীরা বসবাস করে।
মাতুসাদোনার সংসদ সদস্য মুৎসা মুরোমবেডজি জানিয়েছেন, টিনোটেন্ডা বাড়ি থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দূরে পার্কের মধ্যে পথ হারিয়েছিল। এই পার্কে ৪০টির বেশি সিংহ রয়েছে। এই জঙ্গলটি একসময় আফ্রিকার সর্বাধিক সিংহ ঘনত্বযুক্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। টিনোটেন্ডার জন্য এটি ছিল এক ভয়াবহ পরীক্ষার মতো।
জানা গেছে, পাঁচ দিন ধরে পার্কের পাথুরে একটি স্থানে রাত কাটিয়েছে টিনোটেন্ডা। সিংহের গর্জন এবং হাতির চলাচলের মধ্যেও সে তার জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে।
সংসদ সদস্য মুরোমবেডজি জানিয়েছেন, টিনোটেন্ডা বুনো ফল খেয়ে বেঁচে ছিল এবং শুষ্ক নদীর তলদেশে কাঠি দিয়ে ছোট কূপ খুঁড়ে পানি সংগ্রহ করেছে। এ ধরনের কৌশল শুষ্ক এলাকার মানুষেরা প্রায় সময়ই ব্যবহার করে থাকে।
বিবিসি জানিয়েছে, নিয়ামিনিয়ামি সম্প্রদায়ের সদস্যরা প্রতিদিন ড্রাম বাজিয়ে টিনোটেন্ডাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত পার্কের রেঞ্জারেরাই তাকে খুঁজে পায়।
নিখোঁজ হওয়ার পঞ্চম দিনে একটি রেঞ্জার গাড়ির শব্দ শুনে এটির দিকে ছুটে যায় টিনোটেন্ডা। তবে এই যাত্রায় গাড়িটি তাকে না দেখে চলে গেলেও পরে রেঞ্জারেরা তার ছোট পায়ের ছাপ দেখে আবারও অনুসন্ধান শুরু করেন। একপর্যায়ে টিনোটেন্ডাকে জীবিত উদ্ধার করেন তাঁরা।
সাংসদ মুরোমবেডজি বলেন, ‘এই দিনটি সম্ভবত টিনোটেন্ডাকে উদ্ধারের শেষ সুযোগ ছিল।’
মাতুসাদোনা গেম পার্ক প্রায় ১ হাজার ৪৭০ বর্গকিলোমিটার (৫৭০ বর্গমাইল) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এখানে সিংহ ও হাতি ছাড়াও জেব্রা, জলহস্তী এবং হরিণের মতো প্রাণীরা বসবাস করে। এমন কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেঁচে ফেরার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই টিনোটেন্ডার সাহসিকতার প্রশংসা করছেন।
একজন লিখেছেন, ‘এটি মানুষের কল্পনার বাইরে।’
আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘স্কুলে গিয়ে ছেলেটি কী এক দুর্দান্ত গল্প বলবে।’
টিনোটেন্ডার এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে, সংকটময় পরিস্থিতিতে ধৈর্য ও দক্ষতার মূল্য কতটা কার্যকর হতে পারে।