Ajker Patrika
হোম > বিশ্ব > আফ্রিকা

ছেলের মৃত্যুতে ডাকিনি শিকারে নেমেছে হাইতির গ্যাং নেতা, হত্যা ১৮৪

অনলাইন ডেস্ক

ছেলের মৃত্যুতে ডাকিনি শিকারে নেমেছে হাইতির গ্যাং নেতা, হত্যা ১৮৪
হাইতিতে গ্যাং সহিংসতায় চলতি বছর ৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। ছবি: এএফপি

অসুস্থ হয়ে মারা গেছে ছেলে। এর পরই নির্বিচারে মানুষ হত্যা শুরু করেছেন হাইতির এক গ্যাং নেতা। ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী করছেন বয়স্ক ব্যক্তিদের। তাঁর ধারণা, এই লোকেরা ছেলেকে জাদু করে বা বাণ মেরে হত্যা করেছেন। বয়স্ক ব্যক্তি যাঁকেই কালো জাদু চর্চাকারী বলে সন্দেহ হচ্ছে, তাঁকেই হত্যা করছে এই গ্যাংয়ের লোকেরা।

খোদ হাইতির রাজধানী পোর্ট আ প্রিন্সে ঘটেছে এমন ঘটনা। গতকাল সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ফলকার তুর্ক জানান, হাইতির গ্যাং নেতার পরিকল্পিত সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ১৮৪তে দাঁড়িয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

হাইতি সরকারকে এ ঘটনার তদন্ত এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিচারের আওতায় আনা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানা যায়, এই গণহত্যাকে ‘অসহনীয় নিষ্ঠুরতা’ বলে নিন্দা জানিয়েছে হাইতির সরকার।

প্রতিবেদনে জানা যায়, রাজধানীর ওয়ার্ফ জেরেমি এলাকার গ্যাং নেতা মোনেল ফেলিক্স। তিনি মিকানো নামেও পরিচিত। অসুস্থতাজনিত কারণে গত শনিবার বিকেলে ফেলিক্সের ছেলের মৃত্যু হয়। ছেলে যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন একজন ভুডু পুরোহিতের (আফ্রিকান কালো জাদুর তান্ত্রিক) কাছে গিয়েছিলেন ফেলিক্স। ওই পুরোহিত তাঁকে বলেছেন, কোনো এক বয়স্ক লোকের জাদুটোনার কারণে তাঁর ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ডিফেন্স নেটওয়ার্ক (আরএনডিডিএইচ) জানায়, গ্যাং সদস্যরা ১১০ জনকে হত্যা করেছে। গত শুক্রবার ৬০ জনকে হত্যা করা হয়। শনিবার গ্যাং নেতার ছেলের মৃত্যুর পর আরও ৫০ জনকে একইভাবে হত্যা করা হয়েছে।

রাজধানীর সিটি সোলেইল এলাকায় সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডে যাদের মৃত্যু হয় তাদের অধিকাংশ ষাটোর্ধ্ব। আরেকটি মানবাধিকার সংগঠন জানায়, যেসব যুবক এই বয়স্ক ব্যক্তিদের রক্ষা করতে চেয়েছিলেন, তাঁদেরও হত্যা করা হয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গ্যাং সদস্যরা ওই ব্যক্তিদের ঘর থেকে ধরে নিয়ে যায়। বন্দুক, ছুরি বা কাঁচি ব্যবহার করে হত্যা করে। অনেকের মরদেহ বিকৃত করে রাস্তায় পুড়িয়ে ফেলতে দেখেছে স্থানীয়রা।

হাইতির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, ভুডু চর্চা করেন এমন সন্দেহভাজন প্রবীণ ব্যক্তিদের হত্যা করেন গ্যাং নেতা ফেলিক্স। মিকানোর গ্যাং সদস্যরা স্থানীয়দের বাইরে যেতে বাধা দিয়েছিল, যার ফলে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের খবর প্রকাশ্যে এসেছে দেরিতে। এমনকি মোবাইল ফোন ব্যবহারও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে গ্যাং সদস্যরা।

গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ এগেইনস্ট ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (জিআই–টিওসি) হাইতি বিশেষজ্ঞ রোমেন লে কোর গ্র্যান্ডমাইসন জানান, সিটি সোলেইল হাইতির সবচেয়ে দরিদ্র, সহিংসতাপ্রবণ এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোর একটি। এলাকাটি বেশ ছোট। তাই সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে প্রবেশ করা কঠিন হয়ে যায়।

২০২১ সালে হাইতির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মুইজ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে হাইতিতে গ্যাংদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে সহিংসতা। জাতিসংঘ জানায়, চলতি বছর হাইতিতে গ্যাং সহিংসতায় নিহত মানুষের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

হাইতির পোর্ট আ প্রিন্সের আনুমানিক ৮৫ শতাংশ এবং দেশের আরও বড় একটি অংশ এখন একাধিক গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণে। এর ফলে কয়েক লাখ হাইতিবাসী বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দেশটির অভ্যন্তরে ৭ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যাদের অর্ধেকই শিশু।

সুদানে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যু

কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে সংঘর্ষে দুই মাসে নিহত ৭ হাজারে বেশি: প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বের প্রথম সমকামী ইমাম মুহসিন হেনড্রিকসকে গুলি করে হত্যা

মালিতে সোনার খনি ধসে নিহত ৪০

টেকনোক্র্যাট সরকার গঠনের পথে সুদান

লিবিয়ায় দুটি গণকবরে মিলল ৫০ অভিবাসীর মরদেহ

৯৫ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন নামিবিয়ার ‘জাতির পিতা’ নুজোমা

আফ্রিকান বিলিয়নিয়ারের এক্স অ্যাকাউন্ট হ্যাক, ক্রিপটো স্ক্যামে কোটি টাকা লোপাট

কঙ্গোর কারাগারে কয়েক শ নারীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা

সুদানে বাজারে হামলায় নিহত অন্তত ৫৪