দুর্নীতির অভিযোগে গতকাল বুধবার ৫৭ বিচারককে চাকরিচ্যুত করেছেন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট। বিচারকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের রক্ষা করার অভিযোগও এনেছেন তিনি। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের এ উদ্যোগকে ‘রাজনৈতিক ব্যবস্থা সংস্কারের অংশ’ মনে করছেন অনেকে। গতকাল এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা বিচারকদের সংশোধনের অনেক সুযোগ দিয়েছি। বিচার বিভাগকে বারবার সতর্ক করেছি। তার পরও তারা নিজেদের সংশোধন করেননি।’
এ ভাষণের কয়েক ঘণ্টা পর ৫৭ বিচারককে চাকরিচ্যুত করার সরকারি গেজেট প্রকাশ করা হয়।
চাকরিচ্যুতদের মধ্যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সাবেক প্রধান ইউসুফ বাউজাকার রয়েছেন। এ কাউন্সিলকে প্রেসিডেন্ট সাইদ গত ফেব্রুয়ারিতে ভেঙে দিয়েছেন। তিউনিসিয়ায় ২০১১ সালের বিপ্লবের পর থেকে কাউন্সিলটি বিচারিক স্বাধীনতার প্রধান গ্যারান্টর হিসেবে কাজ করছিল। প্রেসিডেন্ট সাইদের এ পদক্ষেপকে ‘বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ’ বলে মনে করেন অনেকে।
কাইস সাইদ গত জুলাইয়ে ক্ষমতাসীন সরকারকে উৎখাত করে নির্বাহী ক্ষমতা দখল করেন এবং ২০১৪ সালের সংবিধানকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে নির্বাচিত সংসদ ভেঙে দেন। তিউনিসিয়াকে সংকট থেকে বাঁচাতে তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন দাবি করে তখন থেকেই ডিক্রি জারি করে দেশ শাসন করছেন।
অর্থনৈতিক স্থবিরতা, রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও দুর্নীতিতে জর্জরিত তিউনিসিয়ায় প্রাথমিকভাবে কাইস সাইদের এ পদক্ষেপগুলো জনসমর্থন অর্জন করেছিল। তবে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব ও নাগরিক সেবা হ্রাসের কারণে জনগণের ক্ষোভ বাড়ছে।
প্রেসিডেন্ট সাইদ ইতিমধ্যে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনেরও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এ মাসেই নতুন সংবিধান প্রবর্তন করা হবে এবং আগামী জুলাই মাসে গণভোট হবে।’ তবে তিউনিসিয়ার প্রায় সব রাজনৈতিক দল এবং শক্তিশালী ইউজিটিটি শ্রমিক ইউনিয়ন সাইদের এই পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইউজিটিটি এ সপ্তাহে বলেছে, সরকারি কর্মীরা ১৬ জুন ধর্মঘটে যাবেন।