চলতি মাসে আর্জেন্টিনার বিভিন্ন স্থানে গত ৬৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে লাতিন আমেরিকার দেশটির জনজীবন।
জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পূর্ব-মধ্য আর্জেন্টিনায় মার্চের প্রথম ১০ দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। রাজধানী বুয়েন্স এইরেসে ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে এ পর্যন্ত প্রতিদিনই ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সিএনএন জানায়, দেশটিতে তাপমাত্রা প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে। ফলে দেখা দিয়েছে খরা, নষ্ট হচ্ছে একের পর একর মাঠের ফসল। কৃষি উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় গভীর অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে অন্যতম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি।
আর্জেন্টিনায় সাধারণত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল চলে। জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ম্যাক্সিমিলিয়ানো হেরারা বলেন, এবার তাপমাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। মার্চ চলে আসার পরও তাপমাত্রা কমার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।
সিএনএনকে হেরারা বলেন, ‘আর্জেন্টিনার ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটেনি। লা নিনার প্রভাবে ‘উত্তপ্ত গ্রীষ্ম’ আশা করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান তাপমাত্রা অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত। আগামী অন্তত পাঁচ মাস এমন অসহনীয় গরম সহ্য করতে হতে পারে।’
এবারের অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির গম উৎপাদনও। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মতে, গত বছরের তুলনায় এ বছর আর্জেন্টিনার গম রপ্তানি ২৮ শতাংশ কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রোজারিও গ্রেনস এক্সচেঞ্জের কৃষি বিশেষজ্ঞ জুলিও ক্যালজাদা বলেন, কৃষকেরা প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন। এই সংকট দেশটির অর্থনৈতিক সংকট আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
এদিকে দেশটির বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ১০০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত তিন দশকে এমন মূল্যস্ফীতি দেখেনি আর্জেন্টিনা। এরই মধ্যে কৃষি খাতে নতুন সংকট দেশটির অর্থনৈতিক বিপর্যয় আরও বাড়াবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।