আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের নানা ভিডিও ছড়ানো হয়। কোথাও মন্দির ভাঙচুর, সংখ্যালঘুর বাড়িতে আগুন দেওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের ভিডিও ছড়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিবিসির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এসব ভিডিওর একটি বড় অংশ আসলে ভুয়া। ভারতের কট্টর ডানপন্থী হিন্দু ইনফ্লুয়েন্সার এবং বিভিন্ন দেশের ডানপন্থীরা এসব ভিডিও ছড়িয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দাঙ্গাকারীরা দলটির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এতে মুসলমান ও হিন্দু—দুই সম্প্রদায়ের মানুষেরাই অংশ নিয়েছেন। তবে ভারতের কট্টর ডানপন্থী হিন্দু ইনফ্লুয়েন্সাররা এসব ঘটনার ভিডিওকে দেখিয়েছেন ভিন্নভাবে। তাঁরা দাবি করেছেন, ‘ইসলামপন্থী মৌলবাদীরা’ হিন্দুদের বিরুদ্ধে ‘সহিংস অ্যাজেন্ডা’ নিয়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চালিয়েছেন।
যেমন ভাইরাল হওয়া এক পোস্টে একটি মন্দিরের ছবি জুড়ে দাবি করা হয়, এটিতে আগুন দিয়েছেন ‘বাংলাদেশের ইসলামপন্থীরা’। ‘বিবিসি ভেরিফাই’য়ে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের নবগ্রহ মন্দির হিসেবে চিহ্নিত ভবনটি সহিংসতার সময়ও অক্ষত ছিল। প্রকৃতপক্ষে আগুন জ্বলছিল কাছাকাছি আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে।
এমন অনেক ভিডিও ছড়িয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নজর রাখা প্রতিষ্ঠান ব্র্যান্ডওয়াচের তথ্য অনুযায়ী, হিন্দুদের বাড়িঘর-মন্দিরে মুসলিমদের হামলা—৪ আগস্টের পর থেকে এমন হ্যাশট্যাগে লাখো মানুষ তাঁদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে এ ধরনের প্রচারণা চালানো হয়েছে, সেসবের অধিকাংশ ভারতীয় অ্যাকাউন্ট।
এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাঈদ আল-জামান বলেন, শেখ হাসিনার আকস্মিক বিদায়ে বিষয়গুলো আরেকবার সামনে এসেছে। কেননা সরকার ও কার্যকর আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে হিন্দুরা নিজেদের অনিরাপদ মনে করেছেন। ঘটনার মিথ্যা বর্ণনা এ পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছে মন্তব্য করে সাঈদ আল-জামান আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওই সব ইনফ্লুয়েন্সার ভয়-আতঙ্ক ছড়িয়ে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছেন।