অনলাইন ডেস্ক
ব্রিটেনে অভিবাসন প্রত্যাশীদের আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডা পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। গত বৃহস্পতিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মানবপাচার, চোরাচালান নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া এবং ইংলিশ চ্যানেলে অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঢল ঠেকানোর লক্ষ্যেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার একাধিক প্রতিবেদন থেকে এ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্রিটেনে আগত অবৈধ অভিবাসীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর লক্ষ্যে এরই মধ্য দেশটির সঙ্গে ব্রিটেন সরকারে একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুসারে ব্রিটেনে অবৈধভাবে প্রবেশ করা অভিবাসন প্রত্যাশীদের ওয়ান ওয়ে বিমান টিকিট দিয়ে রুয়ান্ডায় পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জনসন দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের শহর কেন্টে এক ভাষণে বলেছিলেন, ‘আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে—যুক্তরাজ্যে আশ্রয় পাওয়ার একমাত্র পথ হতে হবে নিরাপদ ও আইনসম্মত। যারা অভিবাসনের ক্ষেত্রে আমাদের ব্যবস্থার অপব্যবহার করবে তারা অবশ্যই এখন থেকে আমাদের দেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে আর কোনো “স্বয়ংক্রিয় পথ” খুঁজে পাবে না বরং তাদের দ্রুত নিজ দেশ কিংবা মানবিকভাবে নিরাপদ তৃতীয় কোনো দেশে স্থানান্তর করা হবে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে আরও বলেন, ‘আমরা যে চুক্তিটি করেছি সেটি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত। চুক্তির ফলে সামনের বছরগুলোতে রুয়ান্ডায় আমরা অন্তত ১০ হাজার লোকের পুনর্বাসন করতে পারব।’
২০১৬ সালের ব্রেক্সিট গণভোটের সময় অভিবাসন নীতি বড় ইস্যুতে পরিণত হয়। জনসন সেসময় বলেছিলেন, তিনি ব্রিটেনের সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনবেন। তবে তাঁর এই সিদ্ধান্ত বিরোধী দল এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দিক থেকে কড়া সমালোচনার মুখোমুখি হয়।
ব্রিটেনের লেবার পার্টির ছায়া মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে বলেছেন, ‘এটি ব্যয়বহুল, অকার্যকর এবং অনৈতিক।’ জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাও (ইউএনএইচসিআর) এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।
এদিকে জনসন সরকার অবৈধ অভিবাসীদের স্থানান্তর করবে বলে চুক্তি করেছে যেই রুয়ান্ডার সঙ্গে, সেই দেশের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়েও গত বছর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল খোদ ব্রিটিশ সরকার।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, রুয়ান্ডা বেশ কিছু মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি কোনো ধরনের দায়বদ্ধতা প্রদর্শন করে না, সম্মান করে না।
এ প্রসঙ্গে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মধ্য আফ্রিকার পরিচালক লুইস মুজ বলেন, ‘রুয়ান্ডায় উদ্বাস্তুরা নির্যাতিত হয়। রুয়ান্ডায় অবস্থানরত শরণার্থীদের কেউ পালানোর চেষ্টা করলে দেশের বাইরে থেকে অপহরণ করে আনার ঘটনাও আছে। বিনা বিচারে আটকে রাখা এবং দুর্ব্যবহার নিত্যদিনের ঘটনা।