অনলাইন ডেস্ক
আত্মহত্যা করতে চাওয়া ব্যক্তিদের বিষাক্ত রাসায়নিক সরবরাহের জন্য অভিযুক্ত কানাডীয় ব্যক্তি কেনেথ ল’র বিরুদ্ধে মামলা সরাসরি বিচারের দিকে এগোবে। অন্টারিওর একটি আদালত গতকাল বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে খবরটি জানিয়েছে।
৫৭ বছর বয়সী টরন্টোর এই সবেক শেফের বিরুদ্ধে রয়েছে মোট ২৮টি হত্যা মামলা। এর মধ্যে ১৪টি প্রথম পর্যায়ের হত্যার অভিযোগ। পাশাপাশি ১৪টি আত্মহত্যায় সহায়তা এবং পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
ল’র বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই অন্টারিওর ১৬ থেকে ৩৬ বছর বয়সী মানুষদের মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত। পুলিশ বলছে, হত্যাকাণ্ডের একাধিক শিকারের বয়স ১৮ বছরের কম।
কৌঁসুলিরা কেনেথ ল’র বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো হত্যা মামলার দ্বিতীয় থেকে প্রথম পর্যায়ে উন্নীত করেছেন। মূলত, এ দুটি পর্যায়ের হত্যার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে পূর্বপরিকল্পনা। প্রথম পর্যায়ের হত্যা অবশ্যই পূর্বপরিকল্পিত হবে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের হত্যাকাণ্ডে এ ধরনের পরিকল্পনা থাকবে না।
বিবিসি বলেছে, যুক্তরাজ্যসহ প্রায় ৪০টি দেশে প্রাণঘাতী পদার্থ সংবলিত ১ হাজার ২০০টিরও বেশি পার্সেল কেনেথ ল পাঠিয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি সর্বশেষ আদালতে হাজিরা দেন। কেনেথ ল নিজেকে দোষী দাবি করতে চান বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী ম্যাথিউ গৌরলে।
এ সপ্তাহেই কৌঁসুলিরা নিশ্চিত করেছেন যে, প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই কেনেথ লকে অভিযুক্ত করে মামলাগুলো সরাসরি বিচারের দিকে এগোবে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পাওয়া প্রমাণগুলো বিচারের জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী কি না, সেটাই মূল্যায়ন করা হয় প্রাথমিক তদন্তে।
গত বছরের মে মাসে গ্রেপ্তারের পর থেকে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন ল। কানাডার বিভিন্ন অঞ্চলের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের পুলিশও কেনেথ লকে খুঁজছে।
যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দাদের মতে, কেনেথ ল যুক্তরাজ্যে ৯০ জনের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত। তবে ল এখন শুধু কানাডার অন্টারিও প্রদেশের অভিযোগগুলোর মুখোমুখি হচ্ছেন।
গত ডিসেম্বরে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো দ্বিতীয় পর্যায়ের হত্যায় উন্নীত করার সময় ইয়র্ক আঞ্চলিক পুলিশের কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে, নতুন কিছু প্রমাণ সামনে এসেছে। এতে ল’র বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো আরও গুরুতর হবে বলেই তাঁরা ধারণা করছিলেন। পরিদর্শক সাইমন জেমস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা প্রমাণগুলো ক্রমাগত মূল্যায়ন করছি।’
কানাডীয় গোয়েন্দারা অভিযোগ করেছে, কেনেথ ল এমন কয়েকটি ওয়েবসাইট চালান, যা মানুষকে আত্মহত্যায় সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম ও পদার্থ সরবরাহ করে। যুক্তরাজ্যে লন্ডন ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) তাঁর বিরুদ্ধে ২৭২ জনকে এ ধরনের সরঞ্জাম ও পদার্থ পাঠানোর অভিযোগ করেছে।
দোষী সাব্যস্ত হলে কেনেথ ল ২৫ বছরের মধ্যে প্যারোলের কোনো সম্ভাবনা ছাড়াই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সম্মুখীন হবেন।