চীনে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হলো সোফিয়া হুয়াং সুকিন নামে প্রখ্যাত এক মি-টু আন্দোলনের কর্মীর। প্রায় ১০ মাসের বিচার শেষে শুক্রবার তাঁর বিরুদ্ধে কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন একটি চীনা আদালত। পাশাপাশি একই অভিযোগে তাঁর সঙ্গে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো অপর আসামি শ্রম অধিকারকর্মী ওয়াং জিয়ানবিংকেও সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, কারাদণ্ড পাওয়া ৩৬ বছর বয়সী হুয়াং সুকিন চীনের মি-টু আন্দোলনের একজন বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ছিলেন। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে তিনি যৌন নিপীড়নের শিকার নারীদের বেশ কিছু গল্প প্রকাশ্যে এনেছিলেন। পাশাপাশি তিনি চীনা সংবাদপত্রগুলোর বার্তাকক্ষে নারীবিদ্বেষী আচরণ এবং যৌন নিপীড়নের বিভিন্ন ঘটনা নিয়েও সরব হয়েছিলেন।
এদিকে হুয়াং সুকিন এবং ওয়াং জিয়ানবিংকে কেন রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলো, সেই বিষয়ে চীনা গণমাধ্যমগুলো কিছু প্রকাশ করেনি। তা ছাড়া ওই বিচারের কার্যক্রম রুদ্ধদ্বারে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও জানা গেছে।
দুই অধিকারকর্মীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ কেন আনা হলো—সেই বিষয়ে তাঁদের সমর্থকেরা অবশ্য কিছু কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। এ বিষয়ে তাঁরা বলছেন, সামাজিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে দুজনই বিভিন্ন ফোরামে তরুণ বয়সীদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলতেন। এর জের ধরেই তাঁরা সরকারের চক্ষুশূল হয়েছিলেন।
বিবিসি জানিয়েছে, হুয়াং সুকিন ২০২১ সালে ব্রিটিশ সরকারের অর্থায়নে ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্সে মাস্টার্স করার জন্য অনুমোদন পেয়েছিলেন। পরে যুক্তরাজ্য যাওয়ার পথে গুয়াংজু বিমানবন্দরে তাঁকে আটক করে চীনা কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরে আটকের সময় ৪০ বছর বয়সী অধিকারকর্মী ওয়াং জিয়ানবিংও ছিলেন এবং তাঁকেও আটক করা হয়েছিল।
সমর্থকেরা অভিযোগ করেছেন, আটকের পর দুই অধিকারকর্মীকে কোনো বিচারের মুখোমুখি না করেই অন্তত এক হাজার দিন কারাগারে রাখা হয়েছিল। পরে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁদের বিচার শুরু হয়।