অনলাইন ডেস্ক
জাতিগত নিধনের ভয়ে নাগোরনো–কারাবাখ থেকে আর্মেনিয়া চলে যাচ্ছেন ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ। আজ রোববার বিচ্ছিন্ন অঞ্চলটির নেতারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, কারাবাখে অবস্থিত আর্মেনীয় জাতি আজারবাইজানের অংশ হয়ে থাকতে চান না।
গত সপ্তাহে আজারবাইজানের কাছে পরাজিত হওয়ার পর আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারাবাখের আর্মেনীয়রা সে অঞ্চল ছাড়তে চান এবং আর্মেনিয়া তাঁদের গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত।’
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
আর্মেনীয় অধ্যুষিত কারাবাখ আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত। তবে তা আজারবাইজানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। গত ২০ সেপ্টেম্বর আজারবাইজানের ২৪ ঘণ্টার সেনা অভিযানের মুখে অঞ্চলটির কর্তৃপক্ষ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।
এ বিষয়ে আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ বলছে, এই দেশটিতে বসবাস করা তাঁদের অধিকার এবং তাঁরাই ওই অঞ্চলের অখণ্ডতা বজায় রাখবেন।
তবে আজারবাইজানের কোনো আশ্বাসেই ভরসা রাখতে পারছেন না কারাবাখের আর্মেনীয় অধিবাসীরা। তাঁরা নিপীড়নের শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।
নাগোরনো–কারাবাখ কর্তৃপক্ষ নিজেদের প্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র ঘোষণা করেছে। এর নাম দিয়েছেন আর্তসাখ প্রজাতন্ত্র। এই প্রশাসনের প্রেসিডেন্ট সামভেল শাহরামানিয়ানের উপদেষ্টা ডেভিড বাবায়ান রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের জনগণ আজারবাইজানের অংশ হয়ে থাকতে চান না। ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশই আমাদের ঐতিহাসিক ভূমি ছেড়ে আসতে চান।’
বাবায়ান বলেন, ‘আমাদের দরিদ্র জনগণের ভাগ্য আর্মেনিয়া ও সমগ্র সভ্য বিশ্বের জন্য ইতিহাসে অসম্মান ও লজ্জা হিসেবে লিপিবদ্ধ হবে। আমাদের ভাগ্যের জন্য যারা দায়ী তাঁদের একদিন সৃষ্টিকর্তার কাছে পাপের জন্য জবাব দিতে হবে।’
কারাবাখের আর্মেনীয় নেতারা একটি বিবৃতিতে বলেছেন, আজারবাইজানের সেনা অভিযানের ফলে যারা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন ও যারা ওই অঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে চান তাঁদের রাশিয়ার শান্তিরক্ষীরা আর্মেনিয়া পৌঁছে দেবে।
বাবায়ান বলেন, কারাবাখ রক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের পদত্যাগ দাবি করে বেশ কয়েকটি ফোনকল এসেছে। ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা কবে থেকে আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুক্ত লাচিন করিডর দিয়ে আসা শুরু করবে তা এখনো নিশ্চিত হয়নি।
পাশনিয়ান জাতির উদ্দেশে মানবিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিলেও কারাবাখের আর্মেনীয়রা ‘জাতিগত নিধনের’ আশঙ্কা করছেন।