আজকের পত্রিকা ডেস্ক
দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কা ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে প্রায় দেউলিয়া হয়ে পড়েছিল। এর জেরে দেশটিতে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতা হয়েছিল, যার পরিণতিতে শ্রীলঙ্কার সরকারকে পদত্যাগ করতে হয়। দেশ ছাড়তে হয়েছিল দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেকেও।
বৈদেশিক ঋণে জর্জরিত হয়ে ওই সময় এমন অবস্থা হয়েছিল যে, দেশটি আর আমদানি ব্যয় মেটাতে পারছিল না। ফলে খাদ্য, ওষুধসহ নিত্যপণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছিল। তেলের স্টেশনে দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল মানুষকে।
প্রায় দেড় বছরের মধ্যে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশটি। কারেন্সি সোয়াপ পদ্ধতির আওতায় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বাংলাদেশের কাছ থেকে এক বছর মেয়াদের ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। চার কিস্তিতে নেওয়া ওই ঋণের ৫০ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশকে ফেরত দিয়েছে দেশটি।
এরই মধ্যে জমে উঠতে শুরু করেছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি পর্যটন খাত এবং জ্যামিতিক হারে বাড়ছে দেশটির রেমিট্যান্স। এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে শিগগিরই দেশটির অর্থনীতি আরও শক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
বিপর্যয়কর অবস্থা থেকে দেশটি যে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারল, তার কারণ হিসেবে দুটি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক প্রিয়াঙ্গা দুনুসিংহে। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতির উন্নতিতে ভূমিকা রেখেছে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু নীতি। ফলে রেমিট্যান্স ও পর্যটনের মতো কিছু ক্ষেত্রে অটোমেটিক রিকভারি হয়েছে। এ দুটির সমন্বয়েই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে আরও অনেক দূর যেতে হবে।
সরকার ব্যয় কমিয়ে রাজস্ব বাড়িয়েছে এবং সংস্কার কার্যক্রম জোরদার করে করজাল বিস্তৃত করেছে। এর ফলও অর্থনীতিতে দেখা যাচ্ছে বলে মনে করেন অধ্যাপক দুনুসিংহে।
[প্রতিবেদনটি বিবিসি, আল জাজিরা অবলম্বনে তৈরি]