আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে গত শুক্রবারে একটি শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩০ জনেরও বেশি ব্যক্তি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের প্রায় সবাই হাজারা জনগোষ্ঠীর তরুণী। শিয়া ধর্মাবলম্বী এই জনগোষ্ঠীটি দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় গোষ্ঠীটির নারীরা আজ শনিবার হাজারাদের বিরুদ্ধে চলমান ‘গণহত্যা’ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাজারা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৫০ জন নারী গতকাল কাবুলের পশ্চিম দিকের শহরতলি দাশত-ই-বারছি এলাকায় ব্যানার-পোস্টার হাতে বিক্ষোভ শুরু করেন। তালেবান সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালের দিকে যাত্রা করেন। ওই হাসপাতালেই হামলায় আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা চলছে।
বিক্ষোভকারীদের মিছিলে ‘হাজারা গণহত্যা বন্ধ কর’, ‘শিয়া হওয়া অপরাধ নয়’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা গেছে। এ ছাড়া ব্যানার-পোস্টারেও একই ধরনের স্লোগান লেখা ছিল। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ফারজানা আহমাদি বলেন, ‘হাজারা নারীদের লক্ষ্য করেই গত শুক্রবারের হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এ গণহত্যার অবসান চাই। অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই আমরা রাস্তায় নেমেছি।’
জাতিসংঘ জানিয়েছে, শুক্রবারের হামলায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত আরও ৩০ জন। কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ২৫-এর বেশি নয়। শুক্রবার ‘কাজ উচ্চ শিক্ষা কেন্দ্র’ নামের যে প্রতিষ্ঠানটিতে হামলা হয়, সেখানে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কেন্দ্রটিতে ছেলে ও মেয়েদের সেকশন ছিল আলাদা। হামলা হয় নারীদের সেকশনে।
গত বছরের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে আফগানিস্তানে বোমা হামলা বেড়েছে। প্রায় প্রতি শুক্রবারই দেশটির কোনো না কোনো মসজিদে হামলা হয়। হামলা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী শুক্রবারের হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এর আগে, একাধিক হামলার দায় শিকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
দাশত-ই-বারছিতে চলতি বছরের মে মাসেও এক ভয়াবহ বোমা হামলা হয়েছিল। তাতে অন্তত ৮৫ জন নিহত ও আরও ৩০০ জন আহত হয়। নিহত ব্যক্তিদের অধিকাংশই নারী। সে হামলারও কেউ দায় স্বীকার করেনি। ওই হামলার প্রায় এক বছর আগে আরেকটি হামলায় নিহত হয়েছিল ২৪ জন। আইএস ওই হামলার দায় স্বীকার করেছিল।