বাংলাদেশি এক সাংবাদিককে অপহরণের অভিযোগে মালয়েশিয়ার সন্দেহভাজন তিন পুলিশ সদস্যের একজনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কুয়ালালামপুর পুলিশের প্রধান আলাউদিন আবদুল মাজিদ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও দুই পুলিশ কর্মকর্তাকেও অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে।
ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই বাংলাদেশি সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাঁকে অপহরণ করে তিন দিন আটকে রাখা হয়েছিল। এ সময় তাঁর ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। মুক্তির জন্য তাঁর কাছে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা দাবি করা হয়।
বাংলাদেশি ওই সাংবাদিক আরও জানান, স্থানীয় অপহরণকারীরা নিজেদের পুলিশের সদস্য বলে দাবি করেছিলেন। সেলানগরের ক্লাং এলাকায় তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল।
অপহরণের শিকার বাংলাদেশি ওই সাংবাদিক নিউ স্ট্রেইট টাইমসকে জানান, অপহরণের প্রায় এক ঘণ্টা পর তাঁকে সেলাঙ্গরের ক্লাং এলাকার কোনো এক বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে অপহরণকারীরা তাঁকে মানুষকে নির্যাতন ও হত্যার একটি ভিডিও দেখায়। এরপর তাদের কথামতো কাজ না করলে তারও একই পরিণতি ঘটবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাংবাদিক বলেন, ‘আমাকে বেঁধে নির্যাতনের পর আমি ইতিমধ্যে ৫০ হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিতের বেশি অর্থ তাদের দিয়েছি। অনলাইনে তাদের এসব টাকা দেওয়া হয়েছে। অপহরণের পরদিন চিকিৎসার জন্য একজন আমাকে ক্লিনিকে নিয়ে যায় এবং সে সময়েই আমি ক্লিনিক থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হই।’
হাসপাতাল থেকে পালিয়ে লুকিয়ে থাকতে মানুষের কাছ সাহায্য চাইলে কেউ এগিয়ে আসেনি। ফলে তিনি আবার ধরা পড়েন এবং অপহরণকারীরা তাঁকে পালানোর জন্য বেদম মারধর করে। তৃতীয় দিনে তিনি অপহরণকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, মালেয়েশিয়ার একটি অপরাধী চক্র, যেখানে বাংলাদেশিরাও জড়িত, সেই চক্রের ফাঁদে পড়েছেন তিনি।
সাংবাদিক আরও জানান, ব্যাখ্যা শোনার পর অপহরণকারীর কাপার, ক্লাং এলাকার একটি ব্যাংকের কাছে তাঁকে ছেড়ে দেয়। তারপর তিনি গোমবাক জেলা পুলিশ সদর দপ্তরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে তিনি নিখোঁজ হওয়ার পরপরই তাঁর আত্মীয়রা গোমবাকে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিল।
এ প্রসঙ্গে কুয়ালালামপুর পুলিশের প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেলানগর পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত করছে। আমরা ওই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি। কুয়ালালামপুর পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’