জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে গুলি করা হয় ২০২২ সালের এই দিনে, অর্থাৎ ৮ জুলাই। জাপানের নারা শহরে রাজনৈতিক একটি সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় দুবার গুলি করা হয় তাঁকে। স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ওই দিনই মৃত্যু হয় তাঁর। তবে শিনজো আবেই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নন, যিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আজকের এই দিনে পাঠকদের জানাব হত্যাকাণ্ডের শিকার জাপানি প্রধানমন্ত্রীদের গল্প।
তবে ১৯৩০-এর দশকে কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ওই সময়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী পদটিকেই রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী হামাগুচি ওসাচি ১৯৩০ সালে অতি ডানপন্থী গোষ্ঠী আইকোকুশার একটি হত্যাপ্রচেষ্টায় আহত হন। এই ক্ষতের কারণেই মারা যান পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৩১ সালে।
এদিকে ইনোকাই তসিয়োশি হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকতে পারেন কেবল ছয় মাস। ১১ জন তরুণ নৌ কর্মকর্তা অতর্কিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ঢুকে পড়ে তাঁকে গুলি করে মারেন। তারিখটা ছিল ১৯৩২ সালের ১৫ মে। ইনোকাই সামরিক শক্তির লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করছিলেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী খুন হন ৭৬ বছর বয়সে।
এরপর ২০২২-এ আবের হত্যাকাণ্ডের আগে আর কোনো প্রধানমন্ত্রীকে এ ধরনের পরিণতির শিকার হতে হয়নি। তবে গুলি বা ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ঠিকই।
১৯৬০ সালের জুলাইয়ে আবের নানা ও জাপানের ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী নবুসুকে কিশির বাম ঊরুতে ছয় বার ছুরিকাঘাত করা হয়। ডানপন্থী এক অধিকারকর্মী তাঁকে আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রীর অফিসের বাইরে। ৬৪ বছর বয়স্ক নবুসুকের এ ঘটনায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হলেও বেঁচে যান। ১৯৮৭ সালে ৯০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
৩০ মে, ১৯৯৪। মোরিহিরো হোসোকাওয়া প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর মাত্র এক মাসের মাথায় গুলি ছোড়া হয় তাঁকে লক্ষ্য করে। একজন ডানপন্থী চরমপন্থী শিনজুকু হোটেলের লবিতে কেবল কয়েক মিটার দূর থেকে হোসোকাওয়াকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। বুলেটটি সিলিংয়ে আঘাত হানে এবং হোসোকাওয়া অক্ষত থাকেন।
আবার ফিরে আসা যাক শিনজো আবের হত্যাকাণ্ডে। এ সময় সন্দেহভাজন হিসেবে তেতসুয়া ইয়ামাগামি নামে ৪১ বছর বয়স্ক এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ঘরে তৈরি একটি আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আবেকে গুলি করার কথা শিকার করেন।
ইয়ামাগামি পরে তদন্তকারীদের বলেছেন যে তিনি ইউনিফিকেশন চার্চের (ইউসি) বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণে আবেকে গুলি করেছিলেন। এই নতুন ধর্মীয় আন্দোলনের সঙ্গে আবে ও তাঁর পরিবারের সম্পর্ক ছিল। ২০০২ সালে ইয়াগামির মা বিপুল সম্পত্তি ইউসিকে দিয়ে দেন। এতে একরকম পথে বসতে হয় ইয়ামাগামিদের।
সূত্র: এবিসি, স্ট্রেট টাইমস, বিবিসি, উইকিপিডিয়া