অনলাইন ডেস্ক
তালেবান সরকার আফগানিস্তানে আটক মার্কিন নাগরিকদের মুক্তি দিতে একটি বন্দিবিনিময় চুক্তি ঘোষণা করেছে। আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা এই বন্দীদের বিনিময়ে আফগান মুজাহিদ খান মোহাম্মদকে মুক্ত করেছে। খান মোহাম্মদকে প্রায় ২০ বছর আগে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় নানগাহার প্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বর্তমানে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার একটি কারাগারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বন্দিবিনিময়ের মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তবে কতজন নাগরিক মুক্তি পেয়েছে বা তাদের নাম কী, সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি। তালেবান সরকার জানিয়েছে, কাতার এই চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছে।
গতকাল সোমবার তালেবান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা এক অফিশিয়াল বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসলামি আমিরাত আফগানিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিস্তৃত এবং ফলপ্রসূ আলোচনার পর একটি চুক্তি সই হয়। যার মাধ্যমে আফগান মুজাহিদ খান মোহাম্মদকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং বিনিময়ে কিছু মার্কিন নাগরিক মুক্তি পায়।’
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দিবিনিময়ে অংশগ্রহণ করা আমেরিকান নাগরিকদের মধ্যে একজন রায়ান করবেট। তিনি আফগানিস্তানে তাঁর ব্যবসার কাজে এসেছিলেন। ২০২১ সালের আগস্টে আফগান সরকার পতনের পর তাঁকে আটক করে তালেবান। রায়ান করবেটের পরিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের অশেষ কৃতজ্ঞতা যে, তাঁর জীবন রক্ষা করা হয়েছে এবং ৮৯৪ দিন পর তাঁকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এটি আমাদের জীবনের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং এবং অনিশ্চিত সময় ছিল।’
এই বন্দিবিনিময়ের ঘোষণা এমন এক সময়ে এল, যেদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের শপথ গ্রহণ করেন। ২০১৭ সালে ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের জন্য তালেবান সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন। এই চুক্তির ফলে ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করা হয়।
ট্রাম্পের নির্বাচনি জয় ঘোষণার পর তালেবান সরকার জানিয়েছিল, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চায় এবং আশা করছে যে, এটি উভয় দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে সহায়ক হবে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বন্দিবিনিময় চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে এবং এটি আফগানিস্তান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্কের পরবর্তী পর্যায়কেও প্রভাবিত করতে পারে।