অনলাইন ডেস্ক
অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে এক শিশুর গায়ে ফুটন্ত কফি ঢেলে দেওয়া এক ব্যক্তিকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। ধারণা করা হচ্ছে, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি ইতিমধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক তাঁকে দেশে প্রত্যর্পণ করে আইনের মুখোমুখি করার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ।
সোমবার বিবিসি জানিয়েছে, শিশু ওপর আক্রমণের ঘটনাটি ঘটেছে গত মাসে। এই ঘটনা পুরো জাতিকে হতবাক করে দিয়েছে। ফুটন্ত কফির দরুন ৯ মাস বয়সী ওই শিশুটির মুখ এবং অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গুরুতরভাবে পুরে গেছে।
এই ঘটনার জন্য ৩৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে কুইন্সল্যান্ড পুলিশ। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর শারীরিক ক্ষতি সাধন চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অপরাধের জন্য অস্ট্রেলিয়ার আইনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার ছয় দিন পর এবং পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার মাত্র ১২ ঘণ্টা আগে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি সিডনি বিমানবন্দর দিয়ে পালিয়ে গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রমণের শিকার শিশুটি গত ৩১ আগস্ট ব্রিজবেন শহরতলির একটি পার্কে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একটি পিকনিকে ছিল। এ সময় পিকনিক স্পটে থাকা শিশুটির দিকে সন্দেহভাজন ব্যক্তি এগিয়ে যান এবং শিশুটির ওপর একটি ফ্লাক্স থেকে গরম কফি ঢেলে পালিয়ে যান।
এ ঘটনার পর শিশুটিকে দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। একজন অফ-ডিউটি নার্স কাছাকাছি এলাকায় তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে শিশুটিকে নিয়ে যান এবং ঠান্ডা পানির মধ্যে তাকে রাখেন।
ওই ঘটনার পর ইতিমধ্যে শিশুটির শরীরে বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে এক বছরেরও বেশি সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন তার বাবা-মা।
ঠিক কী কারণে এমন অবুঝ শিশুর শরীরে গরম কফি ঢেলে দেওয়ার ঘটনাটি ঘটল তা এখনো অজানা। তদন্তের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা পল ডাল্টন গণমাধ্যমের কাছে এই ঘটনাটিকে ‘সবচেয়ে জটিল এবং হতাশাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি নিশ্চিত করেছেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি কোন দেশে পালিয়ে গেছেন। তাঁর নামও জেনে গেছে পুলিশ। তবে এই মুহূর্তে এসব তথ্য প্রকাশ করলে তদন্ত প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলেও জানান ডাল্টন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি একজন ভ্রমণকারী। ২০১৯ সাল থেকে তিনি বারবার অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ করছেন। নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়া উভয় স্থানেই তাঁর ঠিকানা ছিল।
শিশুটির বাবা-মা গণমাধ্যমকে বলেছেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি দেশ ছেড়ে চলে গেছে জানতে পেরে তারা আশাহত হয়েছেন। তবে তাঁরা কিছুটা স্বস্তিও পেয়েছেন যে, লোকটি দেশ ছেড়ে চলে গেছে।