থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার সাজা কমিয়ে দিয়েছেন দেশটির রাজা মাহা ভাজিরালংকর্ন। থাকসিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজা তাঁর সাজা কমিয়ে দেন। শুক্রবার এ বিষয়ে একটি রাজকীয় গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
থাইল্যান্ডের রাজপ্রাসাদ থেকে প্রকাশিত রয়্যাল গেজেটে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকসিন সিনাওয়াত্রার অবদানের বিষয়টি বিবেচনা করে তাঁর সাজা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজার সিদ্ধান্ত অনুসারে থাকসিনের সাজা ৭ বছর কমিয়ে মাত্র এক বছর করা হয়েছে।
গেজেটে বলা হয়েছে, ‘থাকসিন তাঁর অপরাধ স্বীকার করেছেন এবং অনুশোচনা দেখিয়েছেন।’ তারই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর সাজা কমানো হয়েছে। গেজেটে আরও বলা হয়েছে, ‘থাকসিন দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং তিনি দেশ ও জনগণে কল্যাণে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি সব সময়ই রাজতন্ত্রের প্রতি অনুগত ছিলেন।’
গেজেটে আরও বলা হয়েছে, ‘তিনি আইনি প্রক্রিয়াকে সম্মান করে অপরাধ স্বীকার করেছেন, অনুতপ্ত হয়েছেন এবং আদালতের রায় মেনে নিয়েছেন। এই মুহূর্তে তিনি বৃদ্ধ এবং তাঁর এমন কিছু অসুস্থতা রয়েছে, যার জন্য একজন পেশাদার চিকিৎসকের যত্ন প্রয়োজন তাঁর। তাই মহারাজা সাধারণ ক্ষমা করে থাকসিন সিনাওয়াত্রার সাজা কমিয়েছেন…যাতে তিনি তাঁর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে দেশের আরও উন্নয়নে ব্যবহার করতে পারেন।’
এর আগে ২০০৬ সালে এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হন থাইল্যান্ডের ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় এই প্রধানমন্ত্রী। তাঁর আগে তিনি দুই দফায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে তিনি দেশ ছাড়েন। দুই বছর পর ২০০৮ সালে একবার স্বল্প সময়ের জন্য দেশে ফিরেছিলেন।
পরে টানা ১৫ বছর তিনি দেশে ফিরতে পারেননি। সর্বশেষ চলতি বছরের আগস্টে তিনি দেশে ফেরেন। বিমানবন্দরে নিজের তিন সন্তানের সঙ্গে অল্প কিছুক্ষণ কাটানোর পর তাঁকে সেখান থেকে সরাসরি নেওয়া হয় দেশটির সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ১২ বছরের দণ্ডাদেশ চ্যালেঞ্জ করে আপিল করেন তিনি। আদালত সে সময় তাঁর দণ্ড কমিয়ে আট বছর করেন। সেখান থেকে তাঁকে নেওয়া হয় রাজধানী ব্যাংককের একটি কারাগারে। এক দিন পরেই অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে এবং সেখান থেকেই আবেদন করেন রাজার কাছে।