সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষকে উদার হস্তে মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস। তবে এই সহযোগিতা কিছুতেই তালেবানদের পকেটে যেতে দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
১৩ দিন আগে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করা তালেবানের ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও সাধারণ আফগানদের সাহায্য অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ প্রসঙ্গে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘বিভিন্ন উপায়ে আমরা আফগানদের প্রতি মানবিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে পারি। তবে তা কোনোভাবেই দেশটির শাসকদলের তহবিলে যাবে না।’
জাতিসংঘের বরাতে জানা গেছে, আফগান জনসংখ্যার ১ কোটি ৮০ লাখ অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক মানুষের মানবিক সহযোগিতা প্রয়োজন। গত চার বছরে দ্বিতীয়বারের মতো খরার কবলে পড়ায় দেশটির পাঁচ বছরের কম বয়সী অর্ধেক শিশুই এখন তীব্র অপুষ্টির শিকার।
এদিকে, আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর প্রতি আফগানিস্তানে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তালেবান। তারা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে দেশে কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলতে দেওয়া হবে না। মানবাধিকারকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হবে। তাই দাতা গোষ্ঠীগুলো যেন তাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বৈধ কাগজপত্র আছে এমন আফগানদের ভবিষ্যতে বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তালেবান কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার দেশটির টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তব্যে তালেবানের রাজনৈতিক কমিশনের উপ-প্রধান শের মোহম্মদ আব্বাস স্টানিকজাই বলেছেন, ‘আফগান সীমান্ত উন্মুক্ত থাকবে এবং সাধারণ মানুষ যে কোনো সময় দেশের বাইরে যেতে পারবেন।’
স্টানিকজাই এমন এক সময়ে ঘোষণাটি দিয়েছেন, যখন কাবুল বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশের জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন অসংখ্য আফগান। পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর মানুষ অপসারণের শেষ সুযোগটিকে ধরতে চাইছেন তারা।
স্টানিকজাই সব আফগানকে ঐক্যবদ্ধ এবং দেশ পুনর্গঠনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। এ ছাড়া দক্ষ ও শিক্ষিত মানুষকে ফিরে এসে কাজে যোগ দিতেও বলেন তিনি।
স্টানিকজাই বলেন, ‘আফগানিস্তানের জন্য চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার এবং শিক্ষকদের খুব প্রয়োজন। তাদের জন্য কর্মক্ষেত্র প্রস্তুত। সামরিক বেসামরিক সব মানুষকেই তাদের কাজ শুরু করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হলো।’
আফগানিস্তান নিয়ে ইতিবাচক ভাবনা আছে যেসব দেশের তাদের সহযোগিতাকে স্বাগত জানাবে তালেবান। আর বিদেশি কোনো শক্তির হস্তক্ষেপকেও মেনে নেওয়া হবে না বলে দাবি করেছেন স্টানিকজাই।