মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) বিগত চার মাসে জান্তাবাহিনীর কাছ থেকে অন্তত ৯টি শহর কেড়ে নিয়েছে। ধ্বংস করে দিয়েছে জান্তার বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার, জলজ যুদ্ধযানসহ অনেকগুলো নৌ ও স্থল ঘাঁটি। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
রাখাইন রাজ্যের রাজনৈতিক সংগঠন ইউনাইটেড লীগ অব আরাকানের সশস্ত্র শাখা হিসেবে ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আরাকান আর্মি। বর্তমানে এএ আরও দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি ও মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মির সঙ্গে মিলে থ্রি-ব্রাদার্স অ্যালায়েন্স গঠন করে জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
রাখাইনে লড়াই করার পাশাপাশি আরাকান আর্মি মিয়ানমারের চিন, শান ও কাচিন রাজ্য এবং সাগাইন অঞ্চলে লড়াই করছে। এ ক্ষেত্রে আরাকান আর্মি কাচিন ইনডিপেনডেন্ট আর্মির সঙ্গেও জোট বেঁধে লড়ছে। সহায়তা নিচ্ছে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নির্বাসিত জাতীয় ঐক্যের সরকারের সশস্ত্র শাখা পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেরও।
এখন পর্যন্ত আরাকান আর্মি জান্তাবাহিনীর কাছ থেকে রাখাইন ও চিন রাজ্যের মোট ৯টি শহর কেড়ে নিয়েছে। চিন রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর পালেতওয়া, রাখাইনের কায়ুকতাউ, ম্রউক-উ, মিনবিয়া ও পোন্নাজ্ঞিয়ুন শহরসহ মোট ৯টি শহর দখলে নিয়েছে এএ। বাকি শহরগুলো হলো টং পায়ো লেতউই এবং রামরি। এ ছাড়া রাখাইনের বুথিডং শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে তারা।
কেবল শহর নয়, আরাকান আর্মি সীমান্তে মিয়ানমারের সীমান্ত পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর শতাধিক ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ১৬টি ঘাঁটি বেশ বড় আকারের এবং এগুলোর সামরিক গুরুত্ব অনেক বেশি। এসব ঘাঁটি থেকে প্রায় ৭০০ জান্তা সেনা ভারতে এবং প্রায় ৫০০ সেনা বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছিল। এ ছাড়া আরাকান আর্মির আক্রমণে জান্তাবাহিনীর সাতজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন এবং ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কেবল স্থল আক্রমণই নয়, আরাকান আর্মি সাফল্য দেখিয়েছে নৌযুদ্ধেও। বিগত চার মাসে আরাকান আর্মি জান্তাবাহিনীর অন্তত সাতটি কমব্যাট বোট, দুটি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ধ্বংস করে দিয়েছে। একই সঙ্গে এসব নৌযান থেকে ডুবে যাওয়ার সময় বিপুল পরিমাণ জান্তা সেনাকে প্রাণেও বাঁচিয়েছে আরাকান আর্মি।