অনলাইন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন এবং চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের মধ্যকার বৈঠকে শোনা গিয়েছে আশাবাদের সুর। স্থানীয় সময় রোববার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে স্বাগত বক্তব্যে লি কিয়াং বলেন, ‘চীন আন্তরিকভাবে আশা করে যে, দুই দেশ প্রতিপক্ষ নয়, অংশীদার হবে।’ বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
চীন সফরে গিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন। দক্ষিণের বন্দরনগরী গুয়াংঝুতে একাধিক বৈঠক করেছেন জেনেট। সেখানে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী হে লাইফেংয়ের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টার বৈঠক হয়েছে তার। উভয় দেশ সেখানে ভারসাম্যপূর্ণ প্রবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে।
গুয়াংঝু থেকে চীনের রাজধানী বেইজিং পৌঁছে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেছেন, কেবল সরাসরি এবং উন্মুক্ত যোগাযোগের মাধ্যমেই এগিয়ে যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক।
লি কিয়াং বলেন, গুয়াংঝুতে মার্কিন অর্থমন্ত্রীর আগমনের পর থেকেই চীনা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা তার ভ্রমণের বিবরণ অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে অনুসরণ করছে। চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের উন্নতির ব্যাপারে চীনের মানুষের প্রত্যাশাকে তুলে ধরেন লি কিয়াং।
দুই দিনের এ সফরে বেইজিংয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনার শুরুতে লি কিয়াংয়ের উদ্দেশে জেনেট বলেন, ‘গত এক বছরে আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও স্থিতিশীল পর্যায়ে রাখতে পেরেছি বলে আমি বিশ্বাস করি। তবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নিয়ে আমাদের আরও অনেক কিছু করার রয়েছে।’
ইয়েলেন লি কিয়াংকে বলেন যে, বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে তাদের মধ্যকার জটিল সম্পর্ক ঠিকভাবে পরিচালনা করা এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের।
জেনেট আরও বলেন, ‘কঠোর কথোপকথন এড়িয়ে যদি আমরা একে অপরের সঙ্গে সরাসরি ও খোলামেলা যোগাযোগ রাখতে পারি, তাহলে আরও অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব।’ বেইজিংয়ের মেয়র ইয়িং ইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনার আগে চীনের ‘অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ’ বোঝার জন্য স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন তিনি।
জেনেট ইয়েলেন বলেন, খরচ বাড়ানো থেকে শুরু করে অতিরিক্ত বিনিয়োগ মোকাবিলায় স্থানীয় সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এ ক্ষেত্রে বেইজিংয়ের অবশ্যই বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এটি জেনেট ইয়েলেনের দ্বিতীয় চীন সফর।
গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ওয়াশিংটন বিশ্বাস করে যে, পরিবারের ব্যয় চীনের অর্থনীতির একটি বড় অংশ হওয়া দরকার।
পিকিং ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল স্কুল অব ডেভেলপমেন্টের অধ্যাপকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জেনেট ইয়েলেন বলেছেন যে, ‘আজকের নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোর সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব’ সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি শুনতে তিনি আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের জ্যেষ্ঠ ফেলো রায়ান হ্যাস এএফপিকে বলেছেন, দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে অগ্রগতির সম্ভাবনা কতটুকু, তা পরীক্ষার ক্ষেত্র উন্মুক্ত করে দিয়েছে ইয়েলেনের সফর। তবে এই সফর কোনো বস্তুগত অগ্রগতি নিয়ে আসবে কিনা তা কেবল সময়ই বলতে পারে।