অনলাইন ডেস্ক
এশীয় রেশম কীটের ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায় কিউবা। কীটগুলোর সূক্ষ্ম, উজ্জ্বল সাদা তন্তুর ব্যবহার রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পোশাক থেকে শুরু করে প্রসাধনীতে। আর রেশম কীট থেকে মূল্যবান এই তন্তু তৈরির জন্য প্রয়োজন সঠিকভাবে রেশম কীটের চাষ। দেশীয় কারিগরদের এই রেশম তন্তু উৎপাদন ও তার ব্যবহার শেখাতেই প্রকল্প হাতে নিয়েছে কিউবা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কিউবা সরকারের পর সম্প্রতি কিউবার এই প্রকল্পে অর্থ দিয়েছে ফ্রান্স সরকার। নিজ দেশে রেশম কীট চাষের মাধ্যমে তন্তু উৎপাদনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া কিউবার কারিগরদের শেখানোই পরীক্ষামূলক এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। আর সে জন্য কিউবার পরীক্ষাগারে চলছে গবেষণা।
কিউবার জৈব রসায়নবিদ ডেরন মার্টিন পশ্চিম কিউবার ইন্ডিও হ্যাটুই এক্সপেরিমেন্টাল স্টেশনে আর্টেসেদা প্রকল্পের প্রধান। রেশম কীটের পছন্দের খাবার শুঁয়োপোকা সংগ্রহ করা হচ্ছে তার ল্যাবরেটরির বাইরে ঝোপঝাড় থেকে।
মার্টিন বলেন, রেশম কীটগুলোর উৎস এশিয়ায় হলেও তা কিউবার আবহাওয়ার জন্যও বেশ উপযোগী। তাই কিউবায় এসব কীট চাষের সম্ভাবনা অনেক। সঠিক উপায়ে রেশম কীট চাষের পর সাদা তন্তু সংগ্রহ করা গেলে সেসব দিয়ে তৈরি করা যাবে জামা, ব্লাউজ, শার্ট এমনকি প্রসাধনীও।
শুঁয়োপোকা পালন থেকে শুরু করে তাদের পছন্দের খাবার তৈরি করা এবং তার পরে তাদের রেশম সংগ্রহ করা পর্যন্ত প্রক্রিয়াটি শেষ পর্যন্ত তত্ত্বাবধান করছেন ডেরন মার্টিন। তিনি জানান, চীনে প্রায় ৫ হাজার বছরের পুরোনো এই চাষ প্রক্রিয়া সম্প্রতি কিউবায়ও গৃহীত হয়েছে।
মার্টিন বলেন, রেশম কীট চাষের জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিবেশ। নাতিশীতোষ্ণ তাপমাত্রা, বাতাস এবং ঋতুগুলোর বৈশিষ্ট্য রেশম চাষের অনেকটাই উপযোগী। এই আবহাওয়ায় রেশম কীট প্রচুর খাবারও পায়। এ কারণে সহজেই কিউবায় এশীয় কীটদের বাসস্থান স্থানান্তর সম্ভব হয়েছে।
রেশম কীট হলো এশিয়ার স্থানীয় একটি পতঙ্গের লার্ভা। আর এই লার্ভা থেকেই আসে রেশম তন্তু, যা দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্যিক রেশমের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কিউবার রাজধানী হাভানার ব্যবসায়ী ডালগি চাভিয়ানো প্রসাধনী, কারুশিল্প পণ্য, সাবান, কাপড় এবং প্রিন্ট তৈরি করেন। তিনি বলেন, রেশম তন্তু বা সিল্ক ব্যবহার করে ঘরে তৈরি পণ্য পর্যটক এবং স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করেন কারিগরেরা। সম্প্রতি তিনি স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে হাভানায় তুঁতগাছ ও রেশম কীট উৎপাদনের অনুমোদন পেয়েছেন। তিনি এখন নিজস্ব কাঁচামাল তৈরি করতে পারবেন।
এক জোড়া লাল সিল্কের কানের দুলের ওপর কাজ করতে করতেই চাভিয়ানো বলেন, ‘প্রতিদিনই আমি সিল্ক নিয়ে কাজ করতে গিয়ে নতুন কিছু আবিষ্কার করি।’