হোম > বিশ্ব > এশিয়া

৪৩ উইঘুর মুসলিমকে চীনে ফেরত পাঠাচ্ছে থাইল্যান্ড, মানবাধিকারকর্মীদের উদ্বেগ

অনলাইন ডেস্ক

আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭: ২০
ইস্তাম্বুলে উইঘুর অধিকারের দাবি বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে থাইল্যান্ডে আটক ৪৩ জন উইঘুর মুসলমানকে চীনে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটির সরকার। এ নিয়ে তাঁদের পরিবারের সদস্য ও মানবাধিকারকর্মীরা শঙ্কায় আছেন। তাঁরা বলছেন, চীনে গেলে তাঁদের নির্যাতন ও অত্যাচারের শিকার হতে হবে। সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের খবরে এসব বলা হয়েছে।

মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ব্যাংককে আটক এই উইঘুররা তাঁদের সম্ভাব্য ফেরত পাঠানো বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। চিঠিতে তাঁরা বলেছেন, ‘আমাদের জেলে রাখা হতে পারে, এমনকি আমরা প্রাণও হারাতে পারি। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশগুলোর প্রতি তৎক্ষণাৎ হস্তক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ জানাই।’

উইঘুররা মূলত চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলের তুর্কিভাষী মুসলমান সম্প্রদায়। চীনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধের পর সেখানে তাঁদের সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয় দমনের জন্য চীন ব্যাপক দমন-পীড়ন চালিয়েছে বলে অভিযোগ আছে। চীনের এই অভিযানকে পশ্চিমা দেশগুলো ‘গণহত্যা’ হিসেবেও বিবেচনা করে। জিনজিয়াংয়ে কয়েক হাজার উইঘুর বিভিন্ন বন্দিশিবির ও কারাগারে আটক রয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এর আগে, ২০১৪ সালে চীনের নির্যাতন থেকে পালিয়ে আসা এমন ৩ শতাধিক উইঘুর মুসলমানকে থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়া সীমান্তে আটক করা হয়। পরে, ২০১৫ সালে থাইল্যান্ড সরকার ১০৯ জন উইঘুরকে জোরপূর্বক চীনে ফেরত পাঠায়, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।

বর্তমানে থাইল্যান্ডে ৪৮ জন উইঘুর আটক আছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন জেল খাটছেন পালানোর চেষ্টা করার দায়ে। বাকিরা ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে আছেন। বন্দী অবস্থায় তাঁদের জীবনযাপন অত্যন্ত কষ্টকর। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ নিষিদ্ধ এবং আইনজীবী বা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সহায়তা থেকে তাঁরা বঞ্চিত।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে থাই কর্তৃপক্ষ বন্দীদের কাছে স্বেচ্ছায় চীনে ফেরত যাওয়ার নথিতে সই করার অনুরোধ জানায়। বন্দীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, উইঘুর বন্দীদের ফেরত পাঠানোর পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে। ২০২৩ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা থাই সরকারের কাছে পাঠানো চিঠিতে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

উইঘুর অধিকারবিষয়ক একটি সংগঠনের গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি পরিচালক পিটার আরউইন বলেন, ‘৪৩ জন উইঘুরের কোনো অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ নেই। তাঁরা আন্তর্জাতিক আইনের সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী।’

আটক বন্দীদের পরিবারও তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন। বন্দীদের একজনের ভাই বিলাল আবলেত বলেন, ‘আমরা সব সময় ভয়ে থাকি। বিশ্ব সরকারগুলো জানে, কিন্তু চীনের চাপে তারা কিছু করছে না।’

আটকদের আশ্রয় দিতে আগ্রহী আরও দেশ রয়েছে বলে থাইল্যান্ডের মানবাধিকার কমিশনের একটি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু থাই কর্তৃপক্ষ এখনো তাঁদের এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। চীন দাবি করে, উইঘুর মুসলমানরা জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িত। তবে চীন এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

ভাইরাল পোস্টে মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টার থেকে বেঁচে গেলেন চীনা অভিনেতা

ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার বাড়াতে বিয়ে গড়াল অস্ট্রেলিয়ার আদালতে

গহিন বনে পথ হারিয়ে যেভাবে ১৩ দিন বেঁচে ছিলেন হাইকার