আজকের পত্রিকা ডেস্ক
সোমবার মাঝরাতে মার্কিন সেনাদের শেষ বিমানটি আফগানিস্তান ছাড়ে। তবে তার আগেই বদলে গেছে দেশটির দুই দশকের অভ্যস্ত জীবনযাপন। মলিন হয়ে গেছে শহুরে চাকচিক্য। কোথাও শোনা যাচ্ছে না গান।
তালেবান অবশ্য বলেছে, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ততক্ষণই চলবে, যতক্ষণ তা ইসলামি শরিয়া আইনের সঙ্গে বিরোধিতা করবে না। যেখান থেকে তালেবান আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল, সেই কান্দাহার প্রদেশে গত সপ্তাহেই এক নির্দেশে বলা হয়, রেডিও স্টেশনগুলোতে যেন কোনো সংগীত বাজানো না হয়। আর নারী উপস্থাপিকাও যেন না থাকেন। বাস্তব চিত্র হলো, এমন নির্দেশের কোনো দরকারই ছিল না। কারণ নির্দেশের আগেই এসব কার্যক্রম আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন শহরে বন্ধ হয়ে গেছে বিউটি পারলার, জিনসের বদলে অনেকেই আবার আফগানিস্তানের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরতে শুরু করেছেন। আর রেস্তোরাঁগুলোতে বিদেশি খাবারের কোনো চিহ্নই নেই।
গজনি প্রদেশে একটি বেসরকারি রেডিও চ্যানেলের প্রযোজক খালিদ সেদিক্কি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘তালেবান এসে জোর করে বন্ধ করে দেওয়ার আগে আমরাই সব বন্ধ করে দিয়েছি। তা ছাড়া এই মুহূর্তে দেশের কারোরই গান শোনার মুড নেই। বর্তমানে কেউ রেডিও চালু করে কি না তা আমার সন্দেহ আছে।’
গত ২০ বছরে পশ্চিমা দেশগুলোর অনেক সংস্কৃতিই আয়ত্ত করে নিয়েছিল তালেবান। কাবুলসহ অন্যান্য শহরে বসবাসকারী অনেকেই নিয়মিত জিমে যেতেন, এনার্জি ড্রিংকস খেতেন, নানা নকশায় চুল কাটতেন আর পপ গানে মজে থাকা তো আছেই। এ ছাড়া টেলিভিশনে তুর্কি ডেইলি সোপগুলোও ইদানীং খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।
এদিকে, তালেবানের বেশির ভাগ সদস্যই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন, লড়াই-সংগ্রামের ভেতর দিয়ে খুব কঠিন জীবন ছিল তাঁদের। ক্ষমতায় আসায় পর এক তালেবান কমান্ডার ঘোষণা করেছেন, ‘সংস্কৃতি দূষিত হয়ে গেছে, পরিবর্তন প্রয়োজন।’