অনলাইন ডেস্ক
পাপুয়া নিউগিনিতে ভয়াবহ ভূমিধসে ২ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব মানুষের সবাই টনের পর টন মাটি, পাথর এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। গত শুক্রবার দেশটির এনগা প্রদেশের ইয়ামবালি গ্রামের কাছে ভূমিধস ঘটনার পর থেকেই উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। কিন্তু রাতভর বৃষ্টির ফলে আজ সোমবারও উদ্ধার কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও ভূমিধসে চাপা পড়া এক দম্পতিকে অলৌকিকভাবে জীবিত উদ্ধার করার খবর পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে এনবিসির বরাত দিয়ে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরুরি উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলের কাছে পৌঁছালেও সেখানে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। আর ভূমিধসের প্রভাবে প্রধান সড়কগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হেলিকপ্টার ছাড়া ঘটনাস্থলের কাছে পৌঁছানো এখন দুরূহ ব্যাপার। এ অবস্থায় গত তিন দিনের উদ্ধার তৎপরতায় আজ সোমবার পর্যন্ত মাত্র ৬ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে।
এদিকে দুর্ঘটনার পর এক দম্পতিকে অলৌকিকভাবে জীবিত উদ্ধার করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মাটি ও পাথরের নিচে চাপা পড়া অবস্থায়ই ওই দম্পতি বাইরের মানুষদের কাছে সাহায্যের আবেদন পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
জীবিত উদ্ধার হওয়া জনসন এবং জ্যাকলিন ইয়ানডাম গণমাধ্যমের কাছে নিজেদের উদ্ধারের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তাঁরা তাঁদের বেঁচে যাওয়ার ঘটনাটিকে ‘অলৌকিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
জ্যাকলিন বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি থেকে বাঁচানোর জন্য আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা ধরেই নিয়েছিলাম যে, আমরা মারা যাচ্ছি। কিন্তু বড় বড় পাথরগুলো আমাদের চাপা দেয়নি।’
জানা গেছে, বিশাল বড় পাথরগুলো জনসন এবং জ্যাকলিনের বাড়ির ওপর এমন অবস্থায় পড়ে আটকে গিয়েছিল যে, এগুলোর ফাঁকে বাড়িটি পুরোপুরি চাপা পড়েনি। শুধু তাই নয়, আটকে থাকা পাথরগুলো বাড়িটিকে মাটিসহ অন্যান্য ধ্বংসাবশেষের আছড়ে পড়া থেকেও রেহাই দিয়েছে। দম্পতির তিন সন্তান ঘটনার সময় বাড়ি না থাকায় তাঁরা আগেই বেঁচে গিয়েছিলেন।
ঘটনার পরপরই আশপাশের এলাকার মানুষেরাই উদ্ধারকাজের জন্য ছুটে এসেছিলেন। নিজেদের বাড়ির ভেতরে আটকে থাকা অবস্থায় সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন জনসন এবং জ্যাকলিন। সাহায্যের আবেদন শুনেই স্থানীয় মানুষেরা ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ওই দম্পতিকে বের করেন আনেন। উদ্ধারের ঘটনা মনে করে জ্যাকলিন বলেন, ‘যে আট ঘণ্টা আমরা চাপা পড়ে ছিলাম, সেই মুহূর্তগুলো বর্ণনা করা সত্যিই কঠিন। আমরা বিশ্বাস করি, কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যেই ঈশ্বর আমাদের বাঁচিয়েছেন।’