মহামারির শুরুর দিকে করোনার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত চীনের সেই উহান শহরের পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট করে জেলে গিয়েছিলেন দেশটির নাগরিক সাংবাদিক ঝাং ঝান। চার বছর পর সোমবার (১৩ মে) চীনা কর্তৃপক্ষ তাঁকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা, রয়টার্স, এনবিসি সহ একাধিক গণমাধ্যম।
২০২০ সালের শুরুর দিকেই নিজের শহর সাংহাই থেকে উহানে গিয়েছিলেন ৪০ বছর বয়সী ঝাং ঝান। সেখানে উপচে পড়া হাসপাতাল এবং জনশূন্য রাস্তার ভিডিও সহ সার্বিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করছিলেন। দাবি করা হয়, তাঁর এসব প্রতিবেদনে মহামারি নিয়ে চীন সরকারের গোপন রাখা অনেক বিষয় প্রকাশ হয়ে যাচ্ছিল।
কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর ২০২০ সালের মে মাসে ঝাং ঝানকে আটক করা হয়। জুনের শেষদিকে তিনি জেলের ভেতর অনশন শুরু করেছিলেন। সে সময় পুলিশ তাঁর হাত বেঁধে একটি টিউব দিয়ে জোর করে তাঁকে খেতে বাধ্য করেছিল বলে দাবি করেছিলেন আইনজীবীরা।
সেই বছরের ডিসেম্বরেই ‘বিবাদ সৃষ্টি এবং ঝামেলা উসকে দেওয়ার’ একটি অভিযোগে ঝাংকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয় চীনা আদালত।
সমর্থক এবং মানবাধিকার কর্মীদের প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ঝাংকে সোমবার মুক্তি দেওয়া হবে। তবে তাঁর একজন আইনজীবী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মুক্তি দেওয়া হবে কি-না সেই বিষয়ে তিনি এখনো নিশ্চিত করতে পারেননি।
এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঝাংয়ের মুক্তির বিষয়ে তাঁর কাছেও কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মাঝামাঝিতে কারাগারের ভেতর ঝাংয়ের স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতি ঘটেছিল। পরে তাঁকে কারা হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছিল।
ঝাংয়ের একজন সমর্থক তাঁর মুক্তির বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাক্সে লিখেছেন, ‘মুক্তি পাওয়া লোকেরা সাধারণত কঠোর নজরদারির মধ্যে থাকে। এই প্রক্রিয়াটি কারাগারের চেয়েও বেশি বেদনাদায়ক। তবুও আমি আশা করি, তিনি (ঝাং) তার প্রাপ্য স্বাধীনতা ফিরে পাবেন।’