অনলাইন ডেস্ক
লেবাননে গত মঙ্গলবার দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ব্যবহৃত কয়েক শ পেজার একযোগে বিস্ফোরিত হয়। এতে অন্তত ৯ জন নিহত এবং প্রায় ৩ হাজার জন আহত হয়। এই পেজারগুলো তাইওয়ানের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে তৈরি। এ ঘটনার পর থেকেই তাইওয়ানের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নড়েচড়ে বসেছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুসালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তাইওয়ানের একটি কোম্পানি এই পেজারগুলো উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাইওয়ানের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো লেবাননে হিজবুল্লাহর কয়েক হাজার পেজার বিস্ফোরণের ঘটনাটি খুব মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে।
একই অবস্থান ব্যক্ত করা হয়েছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েলিংটন কো বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, তাঁর সরকার লেবাননে চলমান ঘটনাগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এর বাইরে আর কোনো মন্তব্য তিনি করেননি।
এর আগে, লেবাননের একটি নিরাপত্তা সূত্র রয়টার্সকে জানায়, পেজারগুলো তাইওয়ানভিত্তিক গোল্ড অ্যাপোলো নামে একটি কোম্পানি থেকে কেনা হয়েছিল। তবে কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ডিভাইসগুলো তৈরি করেনি। তারা বলেছে, বিএসি নামক একটি কোম্পানি এই (এআর-৯২৪ মডেল) ডিভাইসগুলো তৈরি করে তাদের ব্র্যান্ড নেম ব্যবহার করেছিল এতে। বিএসির অনুমোদন আছে গোল্ড অ্যাপোলের ব্র্যান্ড নেম ব্যবহার করার।
হিজবুল্লাহর সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ইসরায়েলি ট্র্যাকিং এড়াতে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে পেজার ব্যবহার করে। লেবানিজ সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ ‘উৎপাদন পর্যায়েই’ ডিভাইসগুলোতে বিস্ফোরক বসিয়েছে। সূত্রটি বলেছে, ‘মোসাদ ডিভাইসের ভেতরে একটি বোর্ড ঢুকিয়ে দিয়েছিল, যাতে বিস্ফোরক উপাদান ছিল, যা কোড গ্রহণের মাধ্যমে বিস্ফোরিত হওয়ার উপযুক্ত। যেকোনো উপায়ে এটি শনাক্ত করা খুব কঠিন। এমনকি কোনো ডিভাইস বা স্ক্যানার দিয়েও শনাক্ত করা সম্ভব নয়।’
সূত্রটি বলেছে, মোসাদ কোড পাঠিয়ে প্রায় ৩ হাজার পেজারের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। অন্য একটি নিরাপত্তা সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, নতুন পেজারগুলোতে তিন গ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখা হয়েছিল এবং কয়েক মাস আগে এগুলো হিজবুল্লাহর কাছে এলেও তারা বিষয়টি জানতে পারেনি।
আরও পড়ুন: