করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন স্থবির হয়ে থাকা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চীন আবার পুরোদমে চালু করায় দেশটি ঘুরে দাঁড়াবে। আর এর প্রভাবে পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কিছু প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে।
তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও গৃহঋণের চাপের কারণে এই অঞ্চলের উন্নয়নশীল কিছু দেশের প্রবৃদ্ধি কমবে বলে গতকাল শুক্রবার বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক এই ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান প্রতিবেদনে বলেছে, ২৩টি দেশ নিয়ে গঠিত এই অঞ্চলের মধ্যে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। অথচ গত বছরও দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। এর প্রধান কারণ হলো চীনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোদমে চালু হওয়া।
পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে আছে ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মঙ্গোলিয়া, ফিজি, ভানুয়াতু ও পালাউ।
বিশ্বব্যাংকের ধারণা, চীনকে বাদ দিলে এই অঞ্চলের বেশ কিছু দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও উচ্চ গৃহঋণের কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসবে। যদিও করোনার পর ২০২২ সালে তা ৫ দশমিক ৮ শতাংশে উঠেছিল।
বিশ্বব্যাংক বলছে, এই চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব প্রবৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর হলো প্রযুক্তিগত জ্ঞানের প্রবাহ ও সহযোগিতার ওপর দ্বিপক্ষীয় বিধিনিষেধ, যা বিশ্বব্যাপী জ্ঞানের প্রবাহকে শ্লথ করে দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত অর্থনীতির তুলনায় এখনো ছোট হলেও চীন দিন দিন পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অন্যান্য দেশের কাছে উদ্ভাবনী জ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠেছে। তাই চীন বা যুক্তরাষ্ট্রের একচেটিয়া বাণিজ্য জোটের অংশ না হয়ে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে দেশগুলোকে নিজস্ব নীতি সংস্কার করে আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অংশ নিতে পরামর্শ দিচ্ছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যানুয়েলা ফেরো বলেন, এই অঞ্চলের বেশির ভাগ প্রধান অর্থনীতি করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। তবে এসব দেশকে এখন পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। অর্থনীতির গতি ফিরিয়ে আনতে উদ্ভাবন, উৎপাদনশীলতা ও পরিবেশবান্ধব খাতে অগ্রগতি বাড়াতে দেশগুলোর অনেক কিছু করা বাকি।