অনলাইন ডেস্ক
চীনে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মার্কিন নাগরিক জং শিং-ওয়ান লিউং যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বাহিনীর হয়ে তিন দশক গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন বলে বেইজিং দাবি করেছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, হংকংয়ের স্থায়ী বাসিন্দা ৭৮ বছর বয়সী লিউংকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এ বছরের মে মাসে চীনের আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। তবে লিউংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়নি চীনের প্রশাসন। কেবল জানানো হয়েছে, ২০২১ সালের এপ্রিলে চীনের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাঁকে আটক করেন।
সাজা ঘোষণার কয়েক মাস পর চীনের প্রধান বেসামরিক গুপ্তচর সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় গতকাল সোমবার সামাজিক প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে দাবি করেন, লিউংকে ১৯৮৯ সালে নিয়োগ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা। সেখানে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে ‘মেরিট মেডেল’ নামক পদকও পান তিনি।
চীনের নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় লিউংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া চীনা কূটনীতিক এবং চীনা কর্মকর্তাদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতেন তিনি। তথ্য সংগ্রহের জন্য কর্মকর্তাদের তাঁর নির্ধারিত হোটেলে থাকার ব্যাপারে প্রলুব্ধ করতেন। এ ছাড়া কর্মকর্তাদের ব্ল্যাকমেল করার জন্য তথাকথিত ‘হানি ট্র্যাপ’ ব্যবহারের অভিযোগও করা হয়েছে লিউংয়ের বিরুদ্ধে।
লিউং সম্পর্কে এর আগে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছিল যে, তারা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে চীনে একজন মার্কিন নাগরিকের সাজা সম্পর্কে অবগত। পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র সে সময় বলেন, ‘যখন কোনো মার্কিন নাগরিককে বিদেশে আটক করা হয়, তখন তাঁকে দূতাবাসে যোগাযোগসহ প্রাসঙ্গিক সকল সহায়তা প্রদান করা হয়।’
সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হিউস্টন এলাকার বেশ কয়েকটি বেইজিংপন্থী গোষ্ঠীতে একজন অভিজ্ঞ নেতা হিসেবে সম্মানিত ছিলেন লিউং। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে চীনের গণমাধ্যমের কাছে তিনি দেশপ্রেমিক এবং চীনের 'অসামান্য প্রতিনিধি' হিসেবেও প্রশংসিত হয়েছেন।
চীনের গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, লিউংয়ের এই দেশপ্রেমিক চীনা ব্যক্তিত্ব তৈরির কারণই ছিল চীনা ইন্টেলিজেন্সে প্রবেশ করা, যার পৃষ্ঠপোষকতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিদেশে চীনের একাধিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে যাওয়ার মাধ্যমে লিউংয়ের প্রোফাইল ভারী করার পেছনেও ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা।