মিয়ানমারে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরলে দেশটিতে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে জান্তা সরকারের। তবে সেই নির্বাচন হয়তো দেশব্যাপী হবে না। এ কথা বলেছেন জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে লড়ছে জান্তা বাহিনী। তবে জান্তার একের পর এক ঘাঁটি নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। শাসন টিকিয়ে রাখতেই হিমশিম খাচ্ছে জান্তা সরকার।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে সামরিক বাহিনী নির্বাচন আয়োজনের অসংখ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন অংশজুড়ে বিরোধীদের সঙ্গে লড়াই চলছে বলে বারবার বাড়িয়েছে জরুরি অবস্থার মেয়াদ। এবার জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেছেন, কর্মকর্তারা এখন ভোটার তালিকা যাচাইয়ের দিকে মনোনিবেশ করছে।
দেশে শান্তি ফিরলে নির্বাচন আয়োজন করা হতে পারে—এ কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। রুশ সংবাদ সংস্থা তাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জান্তাৎপ্রধান বলেন, ‘দেশ যদি শান্ত এবং স্থিতিশীল হয়, তবে আইন অনুসারে দেশব্যাপী নির্বাচন আয়োজন সম্ভব না হলেও যত বেশি সম্ভব অঞ্চলে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’
২০২১ সালে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে সামরিক বাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখল করে। তখন জান্তা বলেছিল, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে তারা ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।
এর পর থেকেই দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে চলছে সংঘাত। গত তিন বছরে গৃহযুদ্ধ মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে দেশটির অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থায়। এরই মধ্যে দেশের বহু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা সরকার। ক্রমেই বিদ্রোহী জোট শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
২০২৩ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য হলে যুদ্ধ গতি পায়। জান্তা বাহিনীর স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক পরাজয়ের স্বাদ পেতে থাকে। এতে জান্তা বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা ও মনোবল ভেঙে পড়েছে, অভিজাত বিভাগগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বিনষ্ট হয়েছে।