সরকারবিরোধী আন্দোলন-বিক্ষোভে স্থবির হয়ে পড়েছে দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা। বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে আছে দেশটি। সার্বিক অব্যবস্থাপনার জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে শুক্রবার ধর্মঘটে নেমেছেন সরকারি-বেসরকারি খাতের কর্মীরা। ফলে দেশটির হাজার হাজার দোকানপাট, স্কুল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার প্রধান রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল থেকে প্রায় ৩ হাজার কারখানার শ্রমিক ধর্মঘটে যোগ দেন। শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নের নেতা রবি কুমুদেশ বলেছেন, ‘আমরা প্রেসিডেন্টের নীতিগত ভুলগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছি—যেগুলো আমাদের অর্থনীতিকে অত্যন্ত দুর্দশাপূর্ণ অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছিল। তাঁকে অবশ্যই যেতে হবে।’
আমদানি করা খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের ঘাটতির কারণে এক মাসের বেশি সময় ধরে বিক্ষিপ্তভাবে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। তবে শুক্রবারের ধর্মঘটে দেশের বড় বড় শহরে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, বেসরকারি বাস এবং ট্রেনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায় কয়েক হাজার যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন। ধর্মঘটের কারণে কলম্বোর প্রধান রেলস্টেশন বন্ধ ছিল। তবে সরকারি বাসসেবা চালু ছিল। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবাকর্মীরা ধর্মঘটে যোগ দিলেও হাসপাতালগুলোতে জরুরি পরিষেবাগুলো চলছে।
কোভিড-১৯ মহামারি, ক্রমবর্ধমান জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি দেশটির দুর্বল অর্থনীতিকে ভয়াবহভাবে আঘাত করেছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন, ৫০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি বৈদেশিক ঋণে নিমজ্জিত থাকা দেশটির রিজার্ভে ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে মাত্র ৫০ মিলিয়ন ডলার।
ভারত মহাসাগরের দ্বীপদেশটি বর্তমানে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। দেশটি এরই মধ্যে তার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা হারিয়ে এবং ঋণ পরিশোধ বন্ধও করে দিয়েছে।