ঢাকা: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার পরপরই এ হামলার ঘটনা ঘটে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এমনটি জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসরায়েলি সেনাদের অভিযানের প্রতিবাদে স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার বিকেলে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায় হামাস। এরপর সন্ধ্যার দিকে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চলে সিরিজ বিমান হামলা চালায়। এই হামলায় এখন পর্যন্ত ২১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল জনাথন কনরিকাস বলেন, তাঁদের হামলায় অন্তত তিন হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই হামলায় তাদের সশস্ত্র শাখা দ্য ইজজেদাইন আল-কাশেম ব্রিগেডের একজন কমান্ডার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ফায়াদ প্রাণ হারিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, হামাসের উচিত দ্রুত রকেট হামলা বন্ধ করা। সংকট নিরসনে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে সোমবার ভোররাত থেকে পবিত্র আল-আকসা মসজিদে অভিযান চালায় ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী। এতে বহু ফিলিস্তিনি আহত হয়। এসময় ফিলিস্তিনিদের ওপর রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি পুলিশ ও সেনারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, আল আকসা প্রাঙ্গণে গত কয়েক দিনে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩০০ বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের জন্য পূর্ব জেরুজালেমের বাড়িঘর থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার সম্ভাবনায় সেখানে বেশ কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই সহিংসতার ঘটনা ঘটল।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার পশ্চিম তীরের শেখ জাররাহ গ্রামটি থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদে ইসরায়েলের সুপ্রিমকোর্টে শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির জন্য এই শুনানি স্থগিত করা হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন জানায়, যদি গ্রামটি থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া এবং তা বাস্তবায়ন করা হয়, তবে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ইসরায়েল তার বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করবে।
১৯৫৬ সাল থেকে গ্রামটির ২৭টি বাড়িতে ৩৭ ফিলিস্তিনি পরিবার বসবাস করে আসছেন। তাদের মধ্যে ২৮টি শরণার্থী পরিবার ১৯৪৮ সালে জাফা ও হাইফায় জাতিগত শুদ্ধি অভিযানের মুখে এই গ্রামে এসে আশ্রয় নিয়েছিল।