হোম > বিশ্ব > এশিয়া

জাপানে এনে চিকিৎসা দেওয়া হবে গাজার যুদ্ধাহতদের: প্রধানমন্ত্রী

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অঙ্গহানির শিকার এক শিশু। ছবি: সংগৃহীত

গাজার যুদ্ধাহতদের চিকিৎসার জন্য জাপানে আনার পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। গতকাল সোমবার জাপানের পার্লামেন্টে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। তিনি বলেন, তাঁর প্রশাসন এমন একটি নীতি প্রণয়নের জন্য কাজ করছে, যার মাধ্যমে গাজায় আহত ও অসুস্থ মানুষদের জাপানে এনে চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গাজার যুদ্ধাহতদের জাপানে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি গাজার মানুষের জন্য শিক্ষা সহায়তার বিষয়টিও বিবেচনা করছে টোকিও।

জাপানের পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে ইশিবা বলেন, ‘আমরা এমন একটি পরিকল্পনার কথা ভাবছি, যার মাধ্যমে গাজার অসুস্থ ও আহত মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সরকার এ বিষয়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য কাজ করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কেবল চিকিৎসাই নয়, আমরা গাজার মানুষের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করার বিষয়েও চিন্তাভাবনা করছি।’

ইসরায়েলি অবরোধে থাকা গাজা বর্তমানে এক চরম মানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও পরিস্থিতির উন্নতি খুব একটা হয়নি। হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়েছে, চিকিৎসাসামগ্রীর অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে। আহত ও গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য অন্য দেশে স্থানান্তরের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

পার্লামেন্টের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী ইশিবার কাছে এক সংসদ সদস্য জানতে চান, ২০১৭ সালে সিরিয়ার শরণার্থীদের শিক্ষার্থী হিসেবে গ্রহণের যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, সেটিকে কি গাজার বাসিন্দাদের সহায়তার ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে? ওই প্রকল্পের আওতায় জাপান জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা স্বীকৃত ৮২ সিরিয়ার শরণার্থীকে শিক্ষার্থী হিসেবে গ্রহণ করেছিল। মূলত সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নেতাদের জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরি করা এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা প্রদানই ছিল ওই প্রকল্পের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী ইশিবা এই পরামর্শের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গাজার জন্য একই ধরনের একটি প্রকল্প শুরু করার কথা ভাবছি এবং এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা চালাবে।’

জাপানে শরণার্থী গ্রহণের হার দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনার মুখে রয়েছে। দেশটির শরণার্থী নীতিকে অনেকেই রক্ষণশীল মনে করেন। ২০২৩ সালে জাপান ১৩ হাজার ৮২৩ জন শরণার্থীর আবেদন পেয়েছিল। তবে এর মধ্যে মাত্র ১ হাজার ৩১০ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়, যা মোট আবেদনকারীর ১০ শতাংশেরও কম। শরণার্থী গ্রহণের কঠোর নীতির জন্য জাপান আন্তর্জাতিক মহলে বহুবার সমালোচিত হয়েছে। তবে সিরিয়ার শরণার্থীদের শিক্ষার্থী হিসেবে গ্রহণের উদ্যোগ দেশটির শরণার্থী নীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছিল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির চুক্তির আওতায় গত শনিবার পুনরায় চালু হওয়া রাফাহ সীমান্ত দিয়ে ৫০ জন ফিলিস্তিনি রোগী মিসরে প্রবেশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৩০ জন ক্যানসারে আক্রান্ত শিশু এবং তাদের সঙ্গীরাও রয়েছেন।

গাজার হাসপাতালগুলোর পরিচালক জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরের অপেক্ষায় থাকা রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার। এর পাশাপাশি, আরও ১২ হাজার রোগী রয়েছেন, যাদের ‘জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন।’

গাজায় বর্তমানে ওষুধ, অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম ও জরুরি চিকিৎসাসামগ্রীর ঘাটতি দেখা দিয়েছে। হাসপাতালগুলোর বেশির ভাগ ইউনিট বিদ্যুৎ সংকটের কারণে আংশিকভাবে চালু রয়েছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সের অভাবে চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যদি জাপান সরকার গাজার অসুস্থ ও আহত মানুষদের চিকিৎসার জন্য গ্রহণ করে, তাহলে তা হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক উদ্যোগ। জাপান ইতিমধ্যে সিরিয়ার শরণার্থীদের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত হয়েছে। গাজার জন্যও একই ধরনের উদ্যোগ নিলে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের অসংখ্য মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা বলছে, দীর্ঘ মেয়াদে এ ধরনের পদক্ষেপ গাজার মানুষের জন্য বড় ধরনের সহায়তা হতে পারে। তবে এ ধরনের একটি উদ্যোগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক জটিলতা, ভিসা সংক্রান্ত সমস্যা ও অর্থায়নের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে।

জাপান সরকার যদি পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করতে পারে, তাহলে গাজার বহু অসুস্থ ও আহত মানুষের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ হয়ে উঠতে পারে। আন্তর্জাতিক মহলেও এ ধরনের পদক্ষেপ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

তাইওয়ানে মেট্রো স্টেশনে স্মোক বোমা ছুড়ে ছুরি হামলা, নিহত ৩

জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি

দেশের টাকমাথার লোকদের বাঁচানোর লড়াইয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহরে বোমা ফেলল থাইল্যান্ড

ক্রিপটো চুরি করে এই বছর উত্তর কোরিয়ার আয় ২.২ বিলিয়ন ডলার

বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও ধর্মীয় বক্তাদের দমনে কঠোর হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

তাইওয়ানে বিপুল অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন, নিজের বিপদ ডেকে আনছে যুক্তরাষ্ট্র—হুমকি চীনের

জান্তার কাছে এবার মায়ের বেঁচে থাকার প্রমাণ চাইলেন সু চিপুত্র

বন্ডাই বিচে হামলাকারীকে থামাতে গিয়ে প্রাণ হারান এক বৃদ্ধ দম্পতিও!