বিশ্বের প্রবীণতম ব্যক্তি হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস স্বীকৃত জাপানের তোমিকো ইতোওকা ১১৬ বছর বয়সে মারা গেছেন। জাপানের হিয়োগো প্রদেশের আশিয়া শহরের একটি বৃদ্ধাশ্রমে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের আগস্টে স্পেনের মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা ১১৭ বছর বয়সে মারা যাওয়ার পর তোমিকো ইতোওকা বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পান।
তোমিকোর মৃত্যুতে আশিয়া শহরের মেয়র রিওসুকে তাকাশিমা বলেন, ‘ইতোওকা তাঁর দীর্ঘ জীবনের মাধ্যমে আমাদের সাহস ও আশা জুগিয়েছেন।’
তোমিকো ইতোওকা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ছয় বছর আগে, ১৯০৮ সালের মে মাসে জন্মগ্রহণ করেন। সে বছরই যুক্তরাষ্ট্রে ফোর্ডের মডেল টি গাড়ি উন্মোচিত হয়।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তোমিকোকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দেয় গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ।
তোমিকো ইতোওকা তাঁর এই দীর্ঘ জীবনে যুদ্ধ, মহামারি ও প্রযুক্তিগত বিপ্লবের সাক্ষী হয়েছেন। তরুণ বয়সে তিনি ভলিবল খেলতে পছন্দ করতেন। তিনি দু’বার ৩ হাজার ৬৭ মিটার উচ্চতার মাউন্ট অনতাকে আরোহণ করেছিলেন।
২০ বছর বয়সে তোমিকো বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে স্বামীর টেক্সটাইল কারখানা পরিচালনা করতেন। ১৯৭৯ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি জাপানের নারায় একা থাকতেন।
তোমিকো কলা ও জাপানের জনপ্রিয় দুগ্ধজাত সফট ড্রিংক ‘ক্যালপিস’ পান করতে পছন্দ করতেন। তোমিকো ইতোওকার এক পুত্র, এক কন্যা এবং পাঁচ নাতি–নাতনি জীবিত রয়েছেন।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, জাপানে ১০০ বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা ৯৫ হাজারের বেশি, যাদের মধ্যে ৮৮ শতাংশই নারী।
১২ কোটি ৪০ লাখ জনসংখ্যার এই দেশে প্রায় এক–তৃতীয়াংশ মানুষই ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী। তোমিকো ইতোওকার মৃত্যুর পর ব্রাজিলের খ্রিষ্টান সন্ন্যাসিনী ইনাহ ক্যানাবারো লুকাসকে এখন বিশ্বের প্রবীণতম ব্যক্তি বলে ধরা হচ্ছে।