আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবান নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৮ হাজার মানুষ দেশত্যাগ করেছে। আজ শুক্রবার ন্যাটোর এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দ্রুততার সঙ্গে আফগানিস্তান ছাড়তে আগ্রহীদের সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতির কথাও জানিয়েছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি মোকাবিলায় পশ্চিমা দেশগুলো নিস্পৃহ ভূমিকা পালন করছে বলে নানা মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে। হচ্ছে সমালোচনা। এই অবস্থায় আফগানিস্তান ছাড়তে চাওয়া লোকেদের সরিয়ে নেওয়ার গতি বাড়ানো হবে বলে জানালেন ন্যাটো কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ন্যাটোর ওই কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আফগানিস্তান থেকে পালানোর যে স্রোত তৈরি হয়েছিল, তাতে এখনো ভাটা পড়েনি। ভ্রমণের বৈধ কাগজ যাদের নেই, তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে তালেবান।
তালেবান যত দ্রুততার সঙ্গে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিল এবং তার চেয়েও দ্রুততার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলো নিজেদের বাহিনী সরিয়ে নিল, তা এমনকি তালেবান নেতাদেরও বিস্মিত করেছে। এমন অভাবিত ঘটনার মধ্য দিয়ে পুরো আফগানিস্তানের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় এক অন্য রকম অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হয়েছে দেশটিতে। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের আগে আগে তালেবান নেতারা সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে অনুরোধ জানিয়েছেন। তাঁরা বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের আহ্বান জানিয়েছেন, তাঁরা যেন আফগানিস্তান ছেড়ে না যাওয়ার জন্য লোকেদের বোঝান।
এদিকে এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ আসাদাবাদে তালেবানের গুলিতে কয়েকজন আফগান নিহত হয়েছে। তালেবান ঘোষণা অনুযায়ী, ইসলামি আইনে রাষ্ট্র পরিচালনা বা আফগানিস্তানের নাম বদলে ইসলামি আমিরাত অব আফগানিস্তান করার যে পদক্ষেপ, তার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ দাঁড়িয়েছে। বিশেষত পতাকা প্রশ্নে এক ধরনের বিক্ষোভ দানা বাঁধছে। একই ধরনের বিক্ষোভ দেখা গেছে জালালাবাদ ও খোস্তে। এদিকে কাবুলে গতকাল গুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে এ গুলি স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে তালেবানের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে কাবুলের পরিস। থিতি তুলনামূলক শান্ত রয়েছে। গত রোববার তালেবান নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর থেকে কাবুল বিমানবন্দরে এখন পর্যন্ত ১২ জন নিহত হয়েছে।
আফগান পরিস্থিতি এবং সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচতে চাওয়া মানুষদের নিয়ে এবং এই পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। আর গতকাল বৃহস্পতিবার জি–সেভেন দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একযোগে জাতিসংঘের প্রতি ঝুঁকিতে থাকা আফগানদের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানা, যার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে রাশিয়াও।