অনলাইন ডেস্ক
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের পর এবার চীনে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাত। দেশটির রাজধানীতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এতটাই বেশি যে, তা বিগত ১৪০ বছরের রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। প্রবল এই বর্ষণে এখন পর্যন্ত নিহত বেড়ে ২০ জনে দাঁড়িয়েছে। নিখোঁজ হয়েছে আরও অন্তত ২৭ জন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বেইজিংয়ের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, তারা চলতি সপ্তাহের শনিবার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড করেছে ৭৪৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার বা ২৯ দশমিক ৩ ইঞ্চি। ১৮৯১ সালের পর এই পরিমাণ বৃষ্টিপাত আর কখনোই হয়নি।
আবহাওয়া বিভাগ আরও জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে এখন পর্যন্ত ৪০ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা কিনা জুলাই মাসের পুরো বৃষ্টিপাতের গড়ের সমান। মূলত ঘূর্ণিঝড় ডাকসুরির কারণেই এই প্রবল বৃষ্টিপাত। তবে সম্প্রতি এই ঘূর্ণিবায়ুর যাত্রাপথ বেইজিং থেকে দিক পরিবর্তন করেছে। এর আগে ঘূর্ণিঝড়টি চীনের দক্ষিণাঞ্চলের ফুজিয়ান প্রদেশে আঘাত হানে।
আজ বুধবার চীনা কর্তৃপক্ষ জরুরি সেবা বিভাগের কয়েক কর্মীকে বেইজিং থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ঝুওঝো শহরে পাঠিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ডাকসুরি বেইজিংয়ের আশপাশের অঞ্চলেও ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, বেশ কয়েকটি নদীর সঙ্গমস্থলে থাকা ঝুওঝো শহরটি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বেইজিং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজধানীর আশপাশে প্রবল বৃষ্টিতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে এবং ২৭ জন নিখোঁজ হয়েছে। রাজধানী বেইজিং এবং হোবেই প্রদেশে প্রায় ১০ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং চীনা প্রশাসনকে বিপদ মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
২০১২ সালের পর বেইজিংয়ে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। তখন ৭৭ জনের মৃত্যু হয়। চীনে গ্রীষ্মকালে টাইফুন ও ভারী বর্ষণ নতুন নয়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই দুর্যোগ বারবার আসছে, আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠছে। ২০২১ সালে হেনান রাজ্যের ঝেংঝুতে বন্যায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়।