অনলাইন ডেস্ক
চীনের উত্তরাংশে আঘাত হেনেছে টাইফুন ডকসুরি। টাইফুনের প্রভাবে রাজধানী বেইজিংয়ে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভারী বর্ষণ হয়েছে। এতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ভেসে গেছে বেইজিংয়ের রাস্তাঘাট ও গাড়ি।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বরাত দিয়ে মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দিনের বৃষ্টিতে রাজধানীর পশ্চিম উপকণ্ঠের নদীর পানি বেড়েছে। একসময়ের শান্ত জলধারায় এখন ভয়ংকর স্রোত। এতে ভেসে গেছে দুই পাড়ের মানুষের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু ও ২৭ জন নিখোঁজ হয়েছে। প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার মানুষকে শহর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
প্রায় ২ কোটি মানুষের এই মেগাসিটিতে ৪৮ ঘণ্টায় এক মাসের সমপরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। সিএনএন ওয়েদারের মতে, দুই দিনে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১৭৫ দশমিক ৭ মিলিমিটার (প্রায় ৭ ইঞ্চি)।
তবে পশ্চিমের জেলাগুলোর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। মেন্টুগুতে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১৮ ইঞ্চিরও বেশি। বেইজিংয়ের আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, ফাংশানে বৃষ্টিপাত ছিল ১৬ ইঞ্চি।
২০১২ সালের বন্যার পর বেইজিংয়ে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। তখন ৭৭ জনের মৃত্যু হয়।
চীনে গ্রীষ্মকালে টাইফুন ও ভারী বর্ষণ নতুন নয়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই দুর্যোগ বারবার আসছে, আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠছে। ২০২১ সালে হেনান রাজ্যের ঝেংঝুতে বন্যায় ৩০০ জনের মৃত্য়ু হয়।
সিসিটিভির ভিডিওতে দেখা যায়, বেইজিংয়ের একটি ব্রিজ গাড়ির সারি সমেত অর্ধেক ভেঙে গেছে। নদীতে অনেক গাড়ি ভেসে যেতে দেখা গেছে।
টুইটারে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, পশ্চিম বেইজিং মলের বাইরে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বেইজিং ড্যাক্সিং বিমানবন্দর প্লাবিত হয়েছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং উদ্ধারকাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামোগুলো যত দ্রুত সম্ভব মেরামত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে বলেছেন তিনি।
বিগত কয়েক বছরে আঘাত হানা টাইফুনগুলোর মধ্যে ডকসুরি সবচেয়ে শক্তিশালী। এর কারণে ফুজিয়ানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের উপকূলে ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছে। সরকার বলছে, এতে আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফুজিয়ানে আঘাত হানার আগে এই টাইফুন ফিলিপাইনে ৩৯ জনের প্রাণ নেয় ও তাইওয়ানের দক্ষিণাংশে তাণ্ডব চালায়।