অনলাইন ডেস্ক
হংকংয়ে শিশুদের বইয়ে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ প্রচারের অভিযোগে পাঁচজন ‘স্পিচ থেরাপিস্টকে’ ১৯ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মান-লিং, মেলোডি ইয়েং, সিডনি এনজি, স্যামুয়েল চ্যান এবং ফং সু-হো। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অভিযুক্ত ওই পাঁচ ব্যক্তি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দী রয়েছেন এবং রয়ের অপেক্ষায় ছিলেন। অবশেষে তাঁদের অপেক্ষার অবসান হলো।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেকের বয়স ২৫ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। তাঁরা শিশুদের জন্য কার্টুন ই-বুক তৈরি করতেন। কর্তৃপক্ষ বলেছে, হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকে শিশুদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা হিসেবে তাঁরা এই কার্টুনগুলো আঁকতেন।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, বইগুলো মূলত শিশুদের ‘কৌশলগত অবিচার’ সম্পর্কে বুঝতে সহায়তা করার জন্য লেখা হয়েছে। তাঁরা আরও বলেছেন, বইগুলো জনগণের দৃষ্টিকোণ থেকে ইতিহাসকে ব্যাখ্যা করে লেখা হয়েছে।
এদিকে বইগুলোকে ‘মগজ ধোলাইয়ের চর্চা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বিচারক কোওক ওয়াই-কিন। তিনি বলেছেন, ওই পাঁচ থেরাপিস্টের বিরুদ্ধ চীনজুড়ে অস্থিতিশীলতার বীজ বপনের অভিযোগে রয়েছে।
প্রকাশিত তিনটি বইয়ের একটিতে দেখা গেছে, একটি গ্রামে অনেক ভেড়া রয়েছে। সেখানে ভেড়াদের ওপর আক্রমণ করে নেকড়েরা। ভেড়ারা গ্রাম রক্ষার জন্য নেকড়েদের সঙ্গে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়।
হংকং কর্তৃপক্ষ এই ভেড়া ও নেকড়ের লড়াইকে বেইজিংয়ের সঙ্গে তাদের বর্তমান অবস্থার তুলনা করে ব্যাখ্যা করেছে।
বই প্রকাশের পর ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে ঔপনিবেশিক যুগের রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে অভিযোগ দায়ের করা হয়। দেশটিতে এই আইনের ব্যবহার খুব কমই করা হয়। এই আইনের ব্যাপারে বেইজিং সরকার বলেছে, হংকং শহরের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য এই আইন গুরুত্বপূর্ণ। তবে সমালোচকেরা এ ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করে বলেছেন, হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনকে দুর্বল করার জন্যই এই আইন পাস করা হয়েছে।
হংকং চীনের একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল, যা ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ অনুসরণ করে। এর ফলে শহরটিতে স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে বলে মনে করা হয়।