অনলাইন ডেস্ক
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের একজন হিসাবরক্ষকই প্রথম করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল বলে দাবি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে এই দাবি উড়িয়ে দিল সাম্প্রতিক এক গবেষণা। ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, উহানের সামুদ্রিক খাবার বিক্রেতা এক নারী প্রথমে করোনায় আক্রান্ত হন। ওই নারী বিক্রেতা হুনানের সামুদ্রিক খাবারের বাজারে ব্যবসা করতেন। এই বাজার থেকেই করোনা ছড়িয়েছে বলে দাবি করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষণাটি করেছে ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার শীর্ষ ভাইরাস বিশেষজ্ঞ মাইকেল ওরোবে। গবেষণাটি বিশ্বখ্যাত সাময়িকী সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে উহানে রহস্যময় ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। আর এর বেশির ভাগই ছিল হুনানের সামুদ্রিক খাবার বাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর চীনের সরকারি কর্মকর্তারা হাসপাতালগুলোকে এমন রোগী শনাক্ত হলে তাদের জানানোর নির্দেশ দেন। প্রথমে ধারণা করা হচ্ছিল এই ভাইরাসটি হয়তো ২০০২ সালে চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সার্সের মতোই হবে। ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী বেড়ে যাওয়ায় উহান পুলিশ ২০২০ সালের জানুয়ারিতে হুনান বাজারটি বন্ধ করে দেয়।
২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি উহান কর্তৃপক্ষ জানায়, ৮ ডিসেম্বর করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিরাও উহান পরিদর্শন করেন। তাঁরা স্থানীয় চিকিৎসকদের জিজ্ঞেস করেন, কবে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর জবাবে চীনা চিকিৎসকেরা জানান, ৮ ডিসেম্বরে প্রথম করোনা রোগী পাওয়া যায়। তবে এখানে সেই সব চিকিৎসকেরও সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়, যারা চেনের চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে পরে বলে দেওয়া হয়, করোনায় আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তির নাম চেন।
গবেষক মাইকেল ওরোবে বলেন, চেন প্রথম করোনা রোগী নয়। কারণ, তাঁর করোনার উপসর্গ শুরু হয় ১৬ ডিসেম্বর। ২০২০ সালের মার্চে একটি সাক্ষাৎকারে প্রথম করোনা রোগী হিসেবে চিহ্নিত হওয়া চেনও বলেন, ১৬ ডিসেম্বর থেকেই তাঁর জ্বর ছিল।
গবেষক মাইকেল ওরোবে বলেন, করোনার প্রথম দিককার বেশির ভাগ রোগী হুনান বাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল। বিশেষ করে পশ্চিম অংশে যেখানে কুকুরকে খাঁচায় বন্দী করে রাখা হয়, সেই জায়গাগুলো প্রমাণ করে জীবন্ত প্রাণী মহামারির উৎস।
ওরোবের মতে, হুনান বাজারের কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট জিনগত তথ্য আরও যাচাই করার মাধ্যমে ভবিষ্যতের মহামারি ঠেকানো যেতে পারে।