ভাড়াটে সেনাদল ভাগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন এবং তাঁর সহযাত্রীদের দেহাবশেষে বিস্ফোরকের টুকরো পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর দাবি, কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে নয়, হ্যান্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে রাশিয়ার চলমান তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্য গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট নিজেই দিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়। তবে ক্রেমলিনের সমালোচকেরা এবং পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, এটি দুর্ঘটনা নয় বরং ষড়যন্ত্র।
গত আগস্টে মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের মধ্যবর্তী এক স্থানে বিমান দুর্ঘটনায় প্রিগোঝিন ও তাঁর সহযাত্রীদের মৃত্যু হয়। এর দুই মাস আগেই রাশিয়ার শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল প্রিগোজিন।
‘ভালদাই ডিসকাশন’ ক্লাবে এক বৈঠকে পুতিন বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রধান কিছুদিন আগে আমার কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের দেহে হ্যান্ড গ্রেনেডের টুকরো পাওয়া গেছে। বিমানে কোনো বাহ্যিক প্রভাবের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
রাশিয়ার তদন্ত কর্মকর্তারা বলেন, তাঁরা পূর্বপরিকল্পিত হত্যাসহ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য সব পরিস্থিতি নিয়ে তদন্ত করছেন।
দুর্ঘটনায় নিহত প্রিগোঝিন এবং অন্য নয়জনের ওপর মদ এবং মাদক গ্রহণের পরীক্ষা না চালানোর কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার পুতিন তদন্ত কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেন।
এ ছাড়াও ক্ষণস্থায়ী বিদ্রোহের পর ভাগনারের কার্যালয়ে পাঁচ কিলোগ্রাম কোকেন পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন পুতিন।
তিনি বলেন, ‘অ্যালকোহল পরীক্ষার জন্য তাঁদের রক্ত পরীক্ষা করা হয়নি।’
পুতিন আরও বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, সেন্ট পিটার্সবার্গে ভাগনারের সে ঘটনার পর নিরাপত্তা সংস্থা তাঁদের কার্যালয়ে শুধু নগদ এক হাজার কোটি রুবলই (১০ কোটি ডলার) নয়, পাঁচ কিলোগ্রাম কোকেনও পাওয়া গিয়েছিল।’
গত জুনে প্রিগোঝিন মস্কোর মিলিটারি নেতাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন। এ বিদ্রোহ পুতিনের দুই দশকের শাসনের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি ছিল।
বিমান দুর্ঘটনার পর পুতিন প্রিগোঝিনকে জীবনে অনেক গুরুতর ভুল করা এক ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, তিনি তাঁর সঠিক পরিণামই পেয়েছেন।
ভাগনারের বিদ্রোহের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিমান দুর্ঘটনা ঘটানোর সব অভিযোগ ক্রেমলিন প্রত্যাখ্যান করেছে।
তবে, পুতিনের অধীনে থাকা ক্রেমলিনবিরোধীদের এমন রহস্যময় মৃত্যুর ইতিহাস পুরোনো।