অনলাইন ডেস্ক
সেনাবাহিনীতে নারীদের যোগদান বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ডেনমার্ক। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা প্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডরিকসেন বলেছেন, ‘আমরা নিজেদের অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করছি মানে এই নয় যে, আমরা যুদ্ধ চাই। আমরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হচ্ছি কারণ, আমরা যুদ্ধ এড়াতে চাই।’
তিনি বলেন, সরকার সকল লিঙ্গের পূর্ণ সমতা চায় এবং সামরিক সেবার মেয়াদ চার থেকে ১১ মাস পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। দেশটির ২০২৪-২০৩৩ প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার অধীনে, ২০২৬ সাল থেকে প্রতি বছর সেনাবাহিনীতে ৫,০০০ জন পুরুষ এবং নারীর যোগদান নিশ্চিত করা হবে বলেও জানান তিনি।
গত বছর ডেনমার্কে প্রায় ৪,৭০০ জন সামরিক চাকরি করেছেন। নারীদের অংশগ্রহণ শুধু স্বেচ্ছার ভিত্তিতে ছিল এবং সেটাও ছিল সাধারণত চার মাসের জন্য।
নারীদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের পরিকল্পনাগুলো এখনো আইনে পরিণত হয়নি। আগামী সপ্তাহগুলোতে এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হবে। তবে গত বছরের জুন মাসে ডেনিশ পার্লামেন্ট ফোলকেটিংগেটে প্রতিরক্ষা বন্দোবস্তের ইস্যুটি পেয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠের সম্মতি।
প্রতিরক্ষা বিভাগ বলেছে যে, ডেনমার্কের সশস্ত্র বাহিনীর শক্তিশালীকরণ প্রয়োজন। রুশ আগ্রাসনের মুখে ইউরোপের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে দেশগুলোর সেনাবাহিনীতে নিয়োগের পদ্ধতি পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন বলেও জানায় ডেনিশ প্রতিরক্ষা বিভাগ।
ডেনমার্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ট্রোয়েলস লুন্ড পলসেন বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, ইউরোপের নিরাপত্তা নীতির পরিস্থিতি বর্তমানে আরও গুরুতর হয়ে উঠেছে এবং ভবিষ্যতের প্রতিরক্ষার দিকে তাকালে আমাদের এটি বিবেচনায় নিতে হবে। সম্পূর্ণ লিঙ্গ সমতাসহ সেনাবাহিনীর নিয়োগ এমন করতে হবে যাতে তা জাতীয় সংহতি এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী পরিচালনায় অবদান রাখতে পারে।’
বুধবার ঘোষণা করা নতুন ১১ মাস সেনাবাহিনীতে কাজ করার পরিকল্পনার অধীনে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনীর অপারেশনাল সার্ভিসে ছয় মাস কাটানোর আগে নিয়োগপ্রাপ্তদের পাঁচ মাসের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
ডেনমার্কে ১৮ বছরের বেশি বয়সী শারীরিকভাবে উপযুক্ত সকল পুরুষকে সামরিক চাকরির জন্য ডাকা হতে পারে। স্বেচ্ছায় এই কাজের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক পুরুষ পাওয়া গেলে লটারির ব্যবস্থাও থাকতে পারে। যার অর্থ, সবাইকে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া লাগবে না।