যুক্তরাজ্যের ১২ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধর্মঘট চলছে। মজুরি বাড়ানোর দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন অন্তত পাঁচ লাখ শ্রমিক। ধর্মঘটের কারণে বন্ধ রয়েছে পরিবহন ব্যবস্থা, স্কুল, কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। অচল হয়ে পড়েছে জনজীবন।
বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে বলেছে, গতকাল বুধবার থেকে যুক্তরাজ্যে শুরু হয়েছে শ্রমিক ধর্মঘট। ব্রিটেনের শ্রমিক সংগঠন ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেস (টিইউসি) বলেছে, ২০১১ সালের পর এত বড় ধর্মঘট আর হয়নি। ইউরোপের মানুষ জীবনযাপনের ব্যয় মেটাতে না পেরে ধর্মঘটে নেমেছে।
গত মঙ্গলবার ফ্রান্সে ১০ লাখ ২৭ হাজারেও বেশি মানুষ পেনশন সংস্কারসহ নানা দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছিল। এর পরদিন থেকে যুক্তরাজ্যে শুরু হয়েছে নজিরবিহীন ধর্মঘট।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বেতন বাড়ানোকে ‘যুক্তিসংগত’ বলেছেন। তবে তিনি একই সঙ্গে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে বেতন বাড়ালে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা বিপন্ন হবে।’
তবে শ্রমিক সংগঠনগুলো কোটিপতি সুনাককে কম বেতন, অনিরাপদ কাজ ও লাগামছাড়া খরচের চ্যালেঞ্জিং শ্রমিকজীবনের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন বিপুলসংখ্যক শিক্ষক, ট্রেনচালক, উড়োজাহাজের কর্মী, সমুদ্রবন্দরের শ্রমিক ও সীমান্ত বাহিনীর কর্মীরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গতকালের ধর্মঘটে অন্তত তিন লাখ শিক্ষক যোগ দিয়েছিলেন।
লন্ডনের ৫৭ বছর বয়সী শিক্ষক নাইজেল অ্যাডামস বলেছেন, ‘কাজের চাপ বাড়তেই থাকে, বাড়তেই থাকে...আর মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে আমাদের বেতন কমতেই থাকে কমতেই থাকে। এভাবে চলা যায় না। আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’
এদিকে ফরাসি সরকার অবসরের বয়স ৬২ থেকে ৬৪ করার পরিকল্পনা করেছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবারে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ রাজপথে নেমে আসেন। এতে যোগ দিয়েছে দেশটির বাম সংগঠনগুলোর আটটি ইউনিয়ন।
কট্টর বামপন্থী নেতা জ্যঁ লুক মেলেসোঁ বিবিসিকে বলেছেন, ‘মাখোঁর পরাজয় সুনিশ্চিত। কেউ চায় না তাঁর এই বিল পাস হোক। দিন যাচ্ছে, এই বিলের বিপক্ষে মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।’