অনলাইন ডেস্ক
আলেক্সি নাভালনির মুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। পুতিন প্রশাসনের সঙ্গে বন্দিবিনিময়ের অংশ হিসেবে তাঁকে মুক্ত করার কথা চলছিল। এর মধ্যেই হঠাৎ তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নাভালনির সহযোগী মারিয়া পেভচিখ এমন দাবিই করেছেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
তিনি বলেছেন, জার্মানিতে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করছেন রুশ হিটম্যান ভাদিম ক্রাসিকভ। তাঁর সঙ্গে নাভালনির বিনিময় হওয়ার কথা ছিল।
পেভচিখ দাবি করেছেন, বর্তমানে রাশিয়ায় বন্দী দুই মার্কিন নাগরিকও এই চুক্তির অংশ ছিলেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আলোচনা তাঁদের চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল।
ঠিক এর পরের দিনই সাইবেরিয়ার কারাগারে নাভালনি তাঁর কক্ষে মারা যান। সেখানে ১৯ বছরের সাজা খাটছিলেন তিনি। কারা কর্মকর্তারা বলেছেন, ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি হাঁটার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুতই তিনি মারা যান।
নাভালনির ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে পেভচিখ বলেন, নাভালনির মুক্তির জন্য বন্দী বিনিময়ের লক্ষ্যে দুই বছর ধরে আলোচনা চলছিল।
দুর্নীতি বিরোধী ফাউন্ডেশনের (এফবিকে) চেয়ারম্যান পেভচিখ আরও বলেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু হওয়ার পরে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, পুতিন কিছুতেই থামবেন না। নাভালনিকে যেকোনো মূল্যে এবং জরুরি ভিত্তিতে জেল থেকে মুক্ত করা তখন অপরিহার্য ছিল।
পেভচিখ জানান, নাভালনি মানবিক বিনিময়ের অধীনে মুক্তি পেতে যাচ্ছিলেন। আমেরিকান এবং জার্মান কর্মকর্তারা এই আলোচনায় জড়িত ছিলেন। প্রক্রিয়াটি শেষ পর্যন্ত ডিসেম্বরে বন্দী বিনিময়ের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় পরিণত হয়েছিল।
ভাদিম ক্রাসিকভ ২০১৯ সালে জার্মানিতে সাবেক চেচেন বিদ্রোহী কমান্ডার জেলিমখান খানগোশভিলিকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেন। তিনি জার্মানির কারাগারে রয়েছেন। বন্দিবিনিময়ের চুক্তির মধ্যে তিনি ছিলেন। এর মধ্যে রাশিয়ায় বন্দী দুই মার্কিন নাগরিকও ছিলেন। তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করেননি পেভচিখ।
তবে ফেব্রুয়ারির শুরুতে পুতিন মার্কিন টিভি হোস্ট টাকার কার্লসনকে বলেছিলেন যে, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক আমেরিকান সাংবাদিক ইভান গারশকোভিচকে মুক্ত করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
পেভচিখের মতে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শেষ মুহূর্তে চুক্তির বিষয়ে তাঁর মন পরিবর্তন করেছেন। নাভালনিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত বাতিল করেছেন। সম্ভবত দর-কষাকষিতে তিনি স্বস্তি পাচ্ছিলেন না।
ক্রেমলিন এখনো পেভচিখের দাবির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এর আগে বলেছিলেন, নাভালনির মৃত্যুর সঙ্গে সরকারের জড়িত থাকার অভিযোগ ‘অযৌক্তিক’।
কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে নাভালনির মৃতদেহ তাঁর মায়ের কাছে হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেছিল। তবে মৃত্যুর মাত্র আট দিন পর লাশ দেওয়া হয়েছে।