অনলাইন ডেস্ক
তীব্র ঠান্ডা ওখোটস্ক সাগরে একটি ছোট্ট নৌকায় ৬৭ দিন ভেসে থাকার পর একজন রাশিয়ান ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এই খবর জানিয়েছে সিএনএন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরআইএ নভোস্তি জানিয়েছে, উদ্ধার করা ব্যক্তির ভাই এবং তাঁর কিশোর ছেলে তীব্র ঠান্ডায় সাগরেই মারা গেছেন। জীবিত উদ্ধার করা ৪৬ বছর বয়সী ওই রুশ নাগরিকের নাম মিখাইল পিচুগিন বলে উল্লেখ করেছে মাধ্যমটি।
পিচুগিনকে উদ্ধারের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এতে দেখা গেছে—উদ্ধারের মুহূর্তে কমলা লাইফজ্যাকেট পরা পিচুগিন একটি খুঁটিতে লাল পতাকা বেঁধে ছোট্ট নৌকাটির ওপর দাঁড়িয়েছিলেন।
সিএনএন জানিয়েছে, ওখোটস্ক সাগরের বেশির ভাগটাই রাশিয়ার পূর্ব সাইবেরিয়া এবং কামচাটকা উপদ্বীপ দিয়ে ঘেরা। এটি সাধারণত অক্টোবর থেকে মার্চের মধ্যে বরফে পরিণত হয়ে যায়। এই অঞ্চলটিকে পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে শীতল সামুদ্রিক স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেখানেই গত ৯ আগস্ট ক্যাটামারান নৌকায় চড়ে রওনা হয়েছিলেন পিচুগিন এবং তাঁর ভাই। পিচুগিনের ১৫ বছর বয়সী কিশোর ছেলেও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চলীয় পরিবহন প্রসিকিউটর অফিসের মুখপাত্র এলেনা জানিয়েছেন, তিনজনের দলটি সমুদ্রে রওনা হওয়ার কিছু সময় পরই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। এভাবে দুই মাসেরও বেশি সময় কেটে যাওয়ার পর গত সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে কামচাটকা অঞ্চলের উস্ত-খায়রিউজোভো বসতির কাছাকাছি ওখোটস্ক সাগরে পিচুগিনদের বহনকারী নৌকাটিকে দেখতে পায় একটি মাছ ধরার নৌকা।
পিচুগিনের শরীরের ওজনই তাঁকে বাঁচিয়ে দিয়েছে বলে রুশ গণমাধ্যমের কাছে মন্তব্য করেছেন তাঁর স্ত্রী। তিনি জানান, সমুদ্রে নিখোঁজ হওয়ার আগে পিচুগিনের ওজন ছিল প্রায় ১০০ কেজি। আরআইএ নভোস্তিকে তিনি জানান, পিচুগিন এবং তাঁর প্রয়াত ভাই ও ছেলে কাছে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে টিকে থাকার মতো পর্যাপ্ত খাবার ছিল।
উদ্ধারের পর পিচুগিনকে রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চলীয় মাগাদান শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি ক্ষতবিক্ষত ও গুরুতর অবস্থায় থাকলেও সচেতন আছেন বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারীরা।