অনলাইন ডেস্ক
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের দক্ষিণের শহর মারিউপোলে এবার কলেরা ও পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। শহরটির মেয়র বলেছেন, ‘রুশ হামলায় শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। স্যানিটেশন-ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা অনেক মৃতদেহ পচে যাচ্ছে।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মারিউপোলের মেয়র ভাদিম বয়চেঙ্কো স্থানীয় সময় শুক্রবার টেলিভিশনে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধ ইতিমধ্যে মারিউপোলের ২০ হাজার মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। এর মধ্যে আবার আমাশয়, কলেরাসহ নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ল। এসব রোগের সংক্রমণে এখন হাজার হাজার মানুষের প্রাণ যাবে।’
এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ ও রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটিকে মানবিক করিডর স্থাপনে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মেয়র ভাদিম বয়চেঙ্কো। তিনি বলেন, ‘শহরটি এখন রুশদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই শহরের অবশিষ্ট বাসিন্দারা যাতে নিরাপদে শহর ছেড়ে যেতে পারে, তার জন্য মানবিক করিডর স্থাপন করা জরুরি।’
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে বলেছে, রুশ নিয়ন্ত্রিত বিধ্বস্ত মারিউপোলে অনেক দিন ধরেই থাকছেন না মেয়র বয়চেঙ্কো। এই শহরে কয়েক সপ্তাহ ধরে অবিরাম বোমাবর্ষণ করেছে রুশ বাহিনী। এতে অনেক মানুষ নিহত হয়েছে। মৃতদেহগুলো দ্রুত সরিয়ে নিতে পারেনি রুশ সেনারা। এ কারণে মৃতদেহগুলো পচে শহরের জলাশয়গুলো দূষিত হয়ে গেছে। সেখান থেকে পানিবাহিত রোগ ছড়াচ্ছে।
মেয়র বয়চেঙ্কো বিবিসিকে বলেছেন, ‘রুশ বাহিনী এই শহরে কাউকে ঢুকতে দেয় না, বের হতেও দেয় না। মারিউপোলকে পুরোপুরি কোয়ারেন্টাইন করে রেখেছে তারা। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অনেক মৃতদেহ পড়ে আছে। এই শহরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার ব্যবস্থা গত ফেব্রুয়ারি থেকে অকেজো হয়ে আছে।’
মারিউপোলের মেয়র বিবিসিকে আরও বলেন, ‘এখন গ্রীষ্মকাল হওয়ার কারণে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হচ্ছে। কারণ ভারী বর্ষণে অস্থায়ী কবরগুলো ধসে পড়েছে। পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা অকার্যকর থাকায় পচা মৃতদেহগুলো নদীনালার পানির সঙ্গে মিশে রোগ ছড়াচ্ছে।’
ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের মতে, রুশ সৈন্যরা দেশটিতে আক্রমণ করার আগে মারিউপোলে প্রায় ১ লাখ মানুষ বাস করত।