অনলাইন ডেস্ক
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে কিছুদিন আগেও রুশ বাহিনীতে পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ২৮ বছর বয়সী ম্যাক্সিম কুজমিনোভ। কিন্তু সম্প্রতি তিনি দল পরিবর্তন করে ইউক্রেনের পক্ষে চলে এসেছেন। শুধু তাই নয়, গণমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন—রুশ কমান্ডাররা কেমন অমিতব্যয়ী এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ করছেন যুদ্ধের এই দিনগুলোতে।
কুজমিনোভ দাবি করেছেন, পুতিনের কমান্ডারদের একজন সম্প্রতি তাঁর পোষা বিড়ালটিকে পরিবহনের জন্য দুটি সামরিক হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছেন। এর মধ্যে একটি হেলিকপ্টার ওই বিড়ালটিকে বহন করেছিল। আর সেই হেলিকপ্টারটির নিরাপত্তা দিতে পিছু নিয়েছিল আরেকটি সামরিক হেলিকপ্টার।
দ্য নিউ ভয়েস অব ইউক্রেন নামে একটি গণমাধ্যমকে কুজমিনোভ আরও জানান, বিড়ালটি ছিল রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রোস্টভে। সেখান থেকেই হেলিকপ্টারে প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্ব অতিক্রম করে বিড়ালটিকে নিয়ে যাওয়া হয় আরেক শহর ইয়েস্কে।
একটি বিড়ালের জন্য দুটি বিমানের ব্যবহারকে যুদ্ধকালীন জ্বালানির বিপুল অপচয় হিসেবে আখ্যা দেন কুজমিনোভ। শুধু তাই নয়, বিড়ালটিকে পরিবহনের সময় এমআই-৮ ও এমআই-২৪ হেলিকপ্টার দুটির ক্রুরা ছাড়াও অন্তত ৬ জন যোদ্ধাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এমনিতেই ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে পাইলট সংকটে ভুগছে রাশিয়া। এ অবস্থায় তাঁদের বিড়াল পরিবহনের মতো কাজে নিযুক্ত করাকে কমান্ডারদের বিলাসিতা হিসেবেই দেখছেন কুজমিনোভ।
এমন নানা কারণেই কুজমিনোভ রুশ পক্ষ ত্যাগ করার কথা ভাবছিলেন। একপর্যায়ে যোগাযোগ হয়ে যায় ইউক্রেনের গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গেও। গোয়েন্দারা তাঁকে নিরাপত্তা ও নগদ উপঢৌকনের আশ্বাস দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত আগস্টে একটি এমআই-৮ হেলিকপ্টার সহ ফাইটার জেটের বেশ কিছু মালামাল নিয়ে ইউক্রেনের সেনাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
আত্মসমর্পণের পর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কুজমিনোভকে নগদ ৩ লাখ ৯৮ হাজার পাউন্ড দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা।
বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিকে খুন, অশ্রু আর রক্তের খেলা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন কুজমিনোভ। তিনি এসবের অংশ হতে চান না। দাবি করেছেন, ইউক্রেনের মানুষের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী।