জার্মানিতে জাতীয় নির্বাচন আজ। আজ রোববার দেশটির স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচন উপলক্ষে পুরো দেশেই বইছে নির্বাচনী আমেজ। ১৬ বছর জার্মানির চ্যান্সেলরের দায়িত্বে ছিলেন অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। নির্বাচনের মাধ্যমে মার্কেলের উত্তরসূরিকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত বার্লিন।
নির্বাচনে ভোটারসংখ্যা ৬ কোটি। নির্বাচনে লড়ছেন তিনজন প্রার্থী। তাঁরা হলেন অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) আরমিন লাশেট, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসপিডি) ওলাফ শোলজ ও গ্রিন পার্টির আনালেনা বেয়ারবক।
আরমিন লাশেট বর্তমানে জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল নর্থরাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ৷ এই রাজ্যে জার্মানির মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশের বাস ৷ লাশেট বলেন, '১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের রাজ্য পরিচালনাকারী মুখ্যমন্ত্রী চ্যান্সেলর হতে পারেন।'
গ্রিন পার্টির আনালেনা বেয়ারবক ২০১৮ সালে গ্রিন পার্টির অন্যতম শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হন ৷ জার্মানির বিশ্বখ্যাত অটোবানে গাড়ি চলাচলের গতিসীমা ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটারে নির্দিষ্ট করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।
গতকাল শনিবার বিদায়ী চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল নিজ শহর আচেনে আরমিন লাশেটের পক্ষে এক র্যালিতে অংশ নিয়েছেন। ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে ভোটারদের সতর্ক করে অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেন, 'কারা ক্ষমতায় আসছে এটি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।'
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চূড়ান্ত জরিপ বলছে, নির্বাচনে কোন দল জয়ী হবে এটি এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচেভেলে জানিয়েছে, নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো জলবায়ু ও গণপরিবহন, অভিবাসন, সামাজিক সুরক্ষা ও আবাসন, আয়কর, পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষানীতি বিষয়ে নানামুখী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
রক্ষণশীল দল হিসেবে পরিচিত ক্ষমতাসীন ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) পুনরায় ক্ষমতায় এলে পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রভাব মোকাবিলায় কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া দলটি কর ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১৫ লাখেরও বেশি নতুন ঘর বানানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক আয়ের ওপর ধার্যকৃত কর কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ নিয়ে অন্য দলগুলোর চেয়ে বেশি সচেতন বলে পরিচিত গ্রিন পার্টি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, রাস্তাঘাটসহ নানা খাতের উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে ৷ গ্রিন পার্টি ২০৩০ সাল থেকে রাস্তায় কার্বন ডাই-অক্সাউড নির্গমন করে এমন গাড়ি রাখতে চায় না। দলটি মনে করে, অভিবাসনের জন্য উপযোগী দেশ হলেও অভিবাসনকে সহজ করতে জার্মানিতে প্রয়োজনীয় আইনের ঘাটতি রয়েছে ৷ তাই ক্ষমতায় এলে অভিবাসন প্রক্রিয়া আরও দৃঢ় করতে এবং অভিবাসীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টিকে সহজ করতে কাজ করতে চায় দলটি ৷ এছাড়া মাসিক বেতনের অন্তত ৪৮ শতাংশ অবসর ভাতা হিসেবে দেওয়া, ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখাসহ নানান পরিকল্পনা রয়েছে গ্রিন পার্টির।