অনলাইন ডেস্ক
রাশিয়ার রকেট ফোর্স দেশটির আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে পারমাণবিক শক্তিচালিত হাইপারসোনিক গ্লাইড ভেহিকল যুক্ত করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব টিভি চ্যানেলের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বলেছে, রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের একটি মিসাইল সাইলোতে রাখা ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতে এই হাইপারসোনিক ভেহিকল যুক্ত করা হচ্ছে।
হাইপারসোনিক গ্লাইড ভেহিকল হলো এমন এক ধরনের ওয়ারহেড, যেগুলো বিভিন্ন ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে যুক্ত করা যায়। এই ভেহিকলগুলো ন্যূনতম হাইপারসোনিক গতি বা শব্দের গতির চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি দ্রুত বা প্রতি সেকেন্ডে ১ হাজার ৭০০ মিটারের বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। তবে এর চেয়েও এই ভেহিকলগুলোকে ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয় মূলত উৎক্ষেপণের পর ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর গতিপথ ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে।
প্রাথমিকভাবে ওয়ারহেড বিশিষ্ট এসব গ্লাইড ভেহিকল ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে উৎক্ষিপ্ত হয়। পরে লক্ষ্যবস্তুর কাছে গিয়ে এগুলো মূল ক্ষেপণাস্ত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং এককভাবে কাজ করে। এই গ্লাইড ভেহিকলগুলো শব্দের গতির চেয়েও ২৭ গুণ বেশি দ্রুত বা প্রতি ঘণ্টায় ২১ হাজার মাইল বা ৩৪ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে সক্ষম।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন টেলিভিশন চ্যানেল ইসভেজদা চ্যানেল প্রচারিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে কাজাখস্তানের নিকটবর্তী একটি সাইলোতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে উলম্ব অবস্থায় তুলে একটি খাদে নামানো হয়। রাশিয়া ২০১৯ সালে প্রথমবার আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে আভাগাঁর্দ গ্লাইড ভেহিকল যুক্ত করে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে যেসব হাইপারসোনিক গ্লাইড ভেহিকল যুক্ত করছে, সেগুলোর রুশ নাম হলো ‘আভাগাঁর্দ’, যা ইংরেজি ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত। ২০১৮ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রথমবার আভাগাঁর্দ হাইপারসোনিক গ্লাইড ভেহিকলের ঘোষণা দেন। সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন, এই আভাগাঁর্দ মূলত তৈরি করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রজন্মের অস্ত্র তৈরি ও মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তৈরির প্রতিক্রিয়া হিসেবে।