ইউক্রেন যুদ্ধে আর নয়, এবার আফ্রিকায় লড়াইয়ের জন্য যোদ্ধাদের প্রস্তুত হতে বলছেন ভাগনার বাহিনীর প্রধান ইভজেনি প্রিগোঝিন। গত বুধবার টেলিগ্রামে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে যোদ্ধাদের এই নির্দেশনা দিয়েছেন রুশ ভাড়াটে বাহিনীর প্রধান। খবর আল-জাজিরার।
গত মাসে সশস্ত্র বিদ্রোহের পর থেকে এই প্রথমবার প্রিগোঝিনের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেল ভিডিওটির মাধ্যমে। এতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘স্বাগত ছেলেরা... বেলারুশের মাটিতে স্বাগত।’
ভাগনারপ্রধান বলেন, ‘আমরা সম্মানের সঙ্গে লড়েছি। আপনারা রাশিয়ার জন্য অনেক কিছু করেছেন। সম্মুখ যুদ্ধক্ষেত্রে যা ঘটছে, তা লজ্জাজনক। এর সঙ্গে আমাদের জড়ানোর দরকার নেই।’
গত ২৩-২৪ জুন প্রিগোঝিনের ভারী সমরাস্ত্রে সজ্জিত যোদ্ধারা বিদ্রোহের পর রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ-ডন-অন শহর এবং ওই অঞ্চলের সামরিক কমান্ড সেন্টার দখল করে নেয়। এরপর বিশাল সামরিক বহর নিয়ে মস্কোর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল তারা। একপর্যায়ে রাশিয়ার রাজধানী শহরের ২০০ কিলোমিটারের মধ্যেও পৌঁছে যায় ভাগনার বাহিনী। প্রিগোজিনের ভাষ্যমতে, এটি ছিল ‘ন্যায়ের জন্য অভিযান’, যার লক্ষ্য ‘অযোগ্য’ রুশ শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করা।
সে সময় ভাগনারের বিদ্রোহকে কঠোর হাতে দমন করার অঙ্গীকার করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে তাঁর মিত্র বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি হলে অভ্যন্তরীণ লড়াই থেকে রক্ষা পায় রাশিয়া।
চুক্তি অনুসারে প্রিগোঝিন ও তার যোদ্ধারা ভাগনার বাহিনীর সব কার্যক্রম বেলারুশে সরিয়ে নেবেন। অবশ্য এ মাসের শুরুর দিকে লুকাশেঙ্কো জানান, প্রিগোঝিন বেলারুশ সফর শেষে রাশিয়ায় ফিরে গেছেন। আর গত সপ্তাহে নিশ্চিত করা হয়, ব্যর্থ বিদ্রোহের কয়েক দিন পরেই পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন ভাগনারপ্রধান।
বুধবারের ভিডিওতে প্রিগোঝিনকে বলতে শোনা যায়, বেলারুশের স্থানীয় লোকদের সঙ্গে যেন যোদ্ধারা ভালো আচরণ করেন এবং আফ্রিকার জন্য শক্তি সঞ্চয় করে রাখেন।
তিনি বলেন, সম্ভবত আমরা কোনো একপর্যায়ে এসএমওতে (ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান) ফিরব, যখন নিশ্চিত হতে পারব যে আমাদের আর লজ্জা পেতে হবে না।
২০১৮ সাল থেকে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, লিবিয়া, মালিসহ বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশে কাজ করছে ভাগনার বাহিনী। গত সোমবার সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্সি জানিয়েছে, আগামী ৩০ জুলাইয়ের গণভোট সুরক্ষিত করতে সহায়তা করার জন্য কয়েক ডজন ভাগনার যোদ্ধা দেশটিতে পৌঁছেছেন।