অনলাইন ডেস্ক
ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে আশার আলো দেখিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘চূড়ান্ত’ প্রস্তাব। ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই চুক্তির বিষয়টি পর্যালোচনা করে নিজ নিজ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তবে দেশ দুটি কী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তা এখনো উন্মুক্ত হয়নি। তবে এরই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেছেন, পরমাণু চুক্তির ভাগ্য এখন নির্ভর করছে ইরানের ওপর।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এই কথা বলেছেন। আলজেরিয়া সফরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।
মাখোঁ বলেন, ‘পরমাণু চুক্তির পুনরুজ্জীবন এখন ইরানের হাতে এবং এই চুক্তি যদি সব সমস্যা মেটাতে নাও পারে তারপরও চুক্তিটি কার্যকর বলেই বিবেচিত হবে।’ পরমাণু চুক্তিটি বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মাখোঁ আরও বলেন, ‘এই বিষয়ে বল এখন ইরানের কোর্টে।’
এদিকে, ইরানের পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবনের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রস্তাবিত ‘চূড়ান্ত’ প্রস্তাবের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বুধবার মার্কিন প্রশাসন এবং ইরান উভয় দেশই এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আপনারা জানেন যে, আমরা ইরানের পরমাণু চুক্তির বিষয়ে ইইউ প্রস্তাবিত চূড়ান্ত প্রস্তাবের ওপর ইরানের প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। আমরা ইরানের প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনা শেষ করে এনেছি। আমরা আজ ইইউকে এই বিষয়ে আমাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।’
বর্তমান বাইডেন প্রশাসন ইরানের এই পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবনের বিষয়ে বেশ আগ্রহী হলেও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে এনেছিলেন।
অপরদিকে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে—তাঁরা পরমাণু চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া জানতে পেরেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেছেন, ‘ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন মতামত সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ইরান নিজস্ব পর্যালোচনা শেষ করার পর সমন্বয়কারীর (ইইউ) কাছে এই বিষয়ে তার মতামত জানাবে।’
এর আগে, ইইউয়ের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, ইইউ প্রস্তাবিত পরমাণু চুক্তির বিষয়ে ইরান যৌক্তিকভাবে সাড়া দিয়েছে। জোসেপ বোরেল বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি হলো—আমি যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম যা ভারসাম্যপূর্ণ প্রস্তাব বলেই মনে করি। এই প্রস্তাবের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইরানসহ সব পক্ষকে জানানো হয়েছিল। ইরানের তরফ থেকে এই বিষয়ে যে প্রতিক্রিয়া ছিল, তা আমি যুক্তিসংগত বলেই মনে করেছি। যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তর দেয়নি। আমরা সেই প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি এবং আমরা আশা করি মার্কিন প্রতিক্রিয়া আমাদের আলোচনা সম্পূর্ণ করতে সাহায্য করবে।’
জোসেপ বোরেল আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এই চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব। যাই হোক, চলতি সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান পরিষ্কার করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই চুক্তি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারলে পৃথিবী আরও নিরাপদ হয়ে উঠবে।’